আমি সেই প্রতিবাদী ৮ই ফাল্গুনের কথা বলছি,    
হৃদয় তোলপাড় করা বায়ান্নর একুশে ফেব্রুয়ারী,
ভাষাপ্রেমে বাঙালীর বিসর্জনের কালজয়ী ইতিহাস।
বিস্মিত বিশ্ববাসীর অন্তরে প্রোথিত অনন্য দৃষ্টান্ত
অনুপম কাব্যে উচ্চকিত অমর একুশের গৌরব গাথা,            
অবিস্মরণীয় চেতনা দীপ্ত, উদ্দীপক ভাষা আন্দোলন।  
ভীতকাঁপা পিন্ডির স্বৈরশাসকের জুলুমের ১৪৪ ধারা,
বর্বর পুলিশ করে রেখেছে হাজারো রাইফেল তাক,
আমার মায়ের ভাষাকে করে দিতে চায় নিশ্চিহ্ন!
ধারা-ফারা অগ্রাহ্য করে বীরদর্পে এগিয়ে যায়-                      
মুষ্টিবদ্ধ ছাত্রদের অনিবারিত প্রতিবাদী মিছিল
নিস্তব্ধতা ভেঙে স্লোগানে প্রকম্পিত রাজপথ,              
রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই! রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই!  
হটাৎ কাপুরুষের গুলির শব্দে হতবাক ছত্রভঙ্গ
এক এক করে বুকের রক্ত ঢেলে লুটিয়ে পড়ে-
সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার আরও কতো
নাম না জানা ভাষা শহীদের ক্ষতবিক্ষত লাশ,  
কৃষ্ণচূড়ার ফাগুনে আগুন শহীদের রক্তে ম্লান!
ভাষা সৈনিকের কাঁধে লাশ কষ্টের বোবা কান্না।  
বিক্ষোভে ফেটে পড়ে দেশের আপামর জনতা
ঘৃণার ঝড় ওঠে অলি গলি শহর বন্দর গ্রামে  
বলিষ্ঠ প্রতিশোধের গগণ বিদারী  বজ্রধ্বনি-
শহীদের রক্ত! বৃথা যেতে দেবো না!
খুনিদের ফাঁসি চাই! রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই!
শহীদের প্রতিটি অমূল্য রক্ত কণা গড়েছে দৃঢ়
বাঙালীর হৃদয় চত্বরে মুক্তি ও চেতনার মিনার।
বিশ্বে আজ বাংলা ভাষার যে মর্যাদার আসন  
ভাষা সৈনিক -শহীদের স্মরণে তা করি উৎসর্গ,
সশ্রদ্ধ সালাম আর মাগফেরাত কামনা নিরন্তর।