একদা এই নশ্বর ধরণীতে এসেছিল আদিম মানব শিশু,
গুহা-মরু-জল ছাপিয়া ফেলিল সভ্যতাকে পিছু ।


উন্নত মগজের লাঙল চালাইয়া করিল ভুবন শাসন,
তাহার চরিত্রে জাগিয়া উঠিল মানবতা নামী বিশেষণ।


তারপর সভ্য মানুষে মনে জাগে অসভ্য লোভের আগুন,
সাম্রাজ্যের নেশায় সাম্রাজ্যবাদীরা করেছে অবলারে খুন।


চালিয়াছে মানবের শিরের কাছে তলে উলঙ্গ তরবারি,
বাধিয়াছে মুখ, ঢাকিয়াছে চোখ, হস্ত-পদে শিকল-বেড়ী।


মানবের হাতেই লুণ্ঠিত হয়ে মানবতা যুগে যুগে,
কেউবা হারায় জীবন প্রভাতে, কেউবা থাকে মস্ত-সুখে,


তুমি কি রোজ বস্তিতে অনাহারির রাতের ক্রন্দন?
এক চিমটি ভাতের আশায় করেছিলো মৃত্যুতে আগমন?


তুমি কি বন্দুক চিড়ে বেড়িয়ে আশা জমদূত বুলেট?
দাবি আদায়ে নেমে আশা শান্ত বালকের বুকের বেনেট?


তুমি কি কারাগারের চৌদ্দ শিকে বন্দি বিদ্রোহী যুবক?
কলম ফেলে শ্লোগান দুপুরে জীবন বাজি রাখা বরকত?


তুমি কি মায়ের কোল থেকে ছুঁড়ে ফেলা শিশুর জীবন?
পিতার মৃত্যুর বিচার চাইতে এসে ধর্ষিত হওয়া বোন?


তুমি কি স্বদেশ বিতাড়িত মজলুম জনতার ক্রন্দন?
এক টুকরো সুখের আশায় মাঝ সাগরে জীবন বিসর্জন?


তুমি কি কেবলি পুস্তকে ঠাসা গুরুগম্ভীর শব্দের সংযোজন?
স্বজাতির তরে লুথার কিং এর অবিনাশী সে ভাষণ?


তুমি কি দুটো দেশের মাঝে কলমের খোঁচায় করা দেশভাগ?
ধর্ম, জাতি আর বর্ণের নামে দাঙ্গা লাগানো কালো হাত?


মানবতা তুমি আবার এসো চুপিসারে মোর ঘরে,
ফেরার আগে মানুষ জাতিকে যেয়ো শুধু মানুষ করে।


তবুও শত যুগ ধরে যারা গেয়ে গেল মানবতার গান,
হে ধরনীর সন্তান তুমি স্মরণ রেখো তাহাদের অবদান।


মানবতা তুমি কি দূর স্রোতে হারিতে যাওয়া নাবিক,
মানুষের পায়ে স্বর্গ এনে দিবে বলে একদিন দেখিয়েছিলে দিক?