তোমরা যদি একবিন্দু প্রীতি দিতে না পারো,
তবে অন্তত--
একটু হাসি দিও আমার মুখে।
যদি সুখের আলোয় সেই হাসি না ফুটে,
তবে দুঃখের আঁধারেই--হাসাও আমায়।

হাসাতে যদি না-ই পারো,
তবে কাঁদাও আমায়।
সেই কান্নার নোনাজল--
আমার প্রার্থনা!
তা মুছতে হবে না তোমাদের,
শুধু একবার তাকাও চোখে,
আমি ভাববো--
এটাই আমার সুখের কান্না।

তোমাদের চরণধূলি যদি গায়ে লাগে,
লাগুক,
তবে লাথি দিও না নির্মমভাবে।
যদি লাথি দিতেই চাও,
তবে দূরে সরিও না আমায়।
সেই লাথিতেও রাখো--
একফোঁটা মায়া।

তোমরা যদি একফোঁটা ভালোবাসা দাও,
আমি ধরবো--
তা পর্বতের সমান।
ভালো না-ও বাসো, তাতে কিছু আসে যায় না,
তবে অবজ্ঞা কোরো না,
আর কখনও--
আমায় পর ভেবো না।

হৃদয়ের চোখে একবার দেখো আমায়,
না দেখতে পারো--
তবু ঘৃণা কোরো না।
আর যদি করতেই চাও,
তবুও--
আমায় মন থেকে মুছে দিও না।

তোমরা যদি চাও
আমার শরীর থেকে ঝরে পড়ুক লৌহ,
ঝরুক,
তবে তাকে অপবিত্র ভাবো না।
এই মাটি-মাখা মানুষের রক্তে
রয়েছে--
অভাবের ভেতর জন্মানো প্রীতির ছাপ।

তোমরা যদি আহার দাও,
একমুঠোই যথেষ্ট!
আর যদি না পারো,
তবে দিও--
একটু জল।
যাতে আমি দুদিন বাঁচতে পারি,
আর দেখে যেতে পারি--
তোমাদের মুখে সেই হাসি!

তোমরা যদি বাণীর আগুনে জ্বালিয়ে দাও আমায়,
তবু রাখো--
সেই অগ্নিতে একটুখানি স্নেহ।
আমি যদি ছাইও হয়ে যাই,
তবু যেন শান্তি পাই--
তোমাদের ভাষার দহনে।

আমায় একটু বাঁচতে দিও,
তোমাদের প্রাণখোলা হাসিটুকু দেখতে চাই।
যদি শেষমেশ--
আমায় মেরেই ফেলো,
তবে অন্তত--
ভুলে যেও না আমায়!

আমার সমাধির পাশে যদি না-ও যাও,
তবু কণ্ঠে রেখো একটুখানি প্রার্থনা--
“প্রভু, এই অন্ধকার ঘরের বাসিন্দার আত্মাকে,
তুমি শান্তিতে রাখো!”