১। অদৃশ্য আমি


একদিন এই স্কুলবেলাটা আমরা পেরিয়ে যাব।
তখন অলস কোন সময়ে
আমার কথা একটুখানি ভেব।
নাক, চোখ, মুখ মিলিয়ে পুরোটা নয়।
আমি জানি, সে তুমি পারবে না।
সাইকেল পিঠে মুখ নিচু করে চলে যাওয়া আমিটাকে ভেব।


নাহয় শাহীন ভাইয়ের সামনে বসে থাকা আমিটাকে ভেব।
বিকেল থেকে তোমার কোচিং পর্যন্ত বসে থাকা আমি,
একের পর এক বস্তাপচা কবিতায় অসাধারণ বলতে বলতে অতিষ্ঠ আমিটাকে ভেব।
কবিতার আমি কি ছাই বুঝি?
তুমি যে শাহীন ভাইয়ের বাসার সামনে দিয়ে ফিরতে।


নাহয় নাজীবের কাছে ইচ্ছে করে ছক্কা খাওয়া আমিটাকে ভেব।
বন্ধুদের হেরে যাওয়া মুখটা দেখতে কষ্ট হয়।
কিন্তু, কিইবা করব?
আদরের ভাইয়ের মলিন মুখ দেখে তোমার কষ্ট হলে আমি কি সইতে পারব?


নাহয় পাভেলের কাছে মার খাওয়া আমিটাকে ভেব।
আমার নিশ্চয় মাথা খারাপ হয়েছিল।
নইলে কি কেউ পাভেলের মুখে ও কথা বলে?
তোমায় নিয়ে কারো বাজে কল্পনাতো আমার মাথা এলোমেলো করে দেবেই।


একদিন এই স্কুলবেলাটা আমরা পেরিয়ে যাব।
তখন কিছু অলস সময়ও তোমাকে কাটাতে হবে নিশ্চয়।
কিন্তু, আমি জানি।
কোন আমাকেই তুমি ভাববে না।
তুমিতো আমাকে কোনদিন দৃষ্টি মেলে দেখইনি।



২। বাহুল্য দৃষ্টি


স্কুলবেলাটা ফুরিয়ে গেল প্রায়।
এক শহরে আর হয়ত থাকা হবে না।
সময়গুলো গড়িয়ে যাবে ঠিকই।
একটা সাইকেলের বেলের মত মিষ্টি সুর কি থাকবে তাতে?


শাহীন ভাইয়ের বাসার সামনে রাস্তাটা ভাল না।
এখানে এলেই আমার গতি ধীর হয়ে যায়।
কারণ , আমি জানি।
এখানে দুটি চির অতৃপ্ত চোখ আমার জন্য প্রতিদিন অপেক্ষা করে।
মা তো জানে না।
আমার কোচিং সপ্তাহে চারদিন।
বাকি দুদিন সেই চোখ দুটি আমাকে কোচিং এ নিয়ে যায়।


নাজীবটা বড় বোকা।
অন্য কারো সাথে পারে না।
শুধু জেলা দলে খেলা তোমাকে ছক্কা মেরে সে নিজেকে সাকিব ভাবে প্রতিদিন।
আমি প্রথমে বুঝতাম না কিছু।
তৃতীয় দিনে মনের চোখ খুলল।
সেখানে এল আনন্দের ঝিকিমিকি।
তারপরে মেঘ এল।
তোমার হার আমাকে স্যাঁতসেঁতে করে দেয়।


নাজীবের চেয়ে তোমার বুদ্ধি আরো কম।
পাভেলের মত ছেলের কথায় কেউ কান দেয়?
কিছু অক্ষম আশা,
যার অস্তিত্ব একটা নোংরা মানুষের নোংরা মুখ থেকে মূহুর্ত পরে হারিয়ে যায়।
আর তোমার কালশিটে পরা মুখ।
কোনটা আমাকে বেশি যন্ত্রণা দেয়?


স্কুলবেলাটা ফুরিয়ে গেল প্রায়।
হয়ত আমাদের মাঝে অনেকগুলো ঘণ্টার যাত্রাদুরত্ব আসবে।
ভাবনাগুলোর দখল তো তোমারই থাকবে।
যার উপস্থিতি অনুভব করা যায় সমস্ত অস্তিত্ব দিয়ে,
তাকে দেখার জন্য দৃষ্টি মেলে তাকানো বাহুল্য মাত্র।