যেখানে নীরব ঈশ্বর Jekhane Nirob Ishwar

মানব সভ্যতার ইতিহাস দ্বন্দ্ব, সংঘাত এবং পরিবর্তনের এক নিরন্তর কাব্য। ধর্মের আধ্যাত্মিক আদর্শ যখন কুসংস্কারের কুয়াশায় ঢেকে যায়, তখন বিশ্বাসের শুদ্ধতাও বিভ্রান্তির শিকলে বন্দী হয়। ঈশ্বরের রহস্যময় নীরবতা একদিকে আধ্যাত্মিক অন্বেষণের মর্মস্পর্শী আবেদন, অন্যদিকে মানবিক দুর্ভোগের নীরব দর্শক হয়ে থেকে যায়। আধুনিক জাতীয়তাবাদের রাজনৈতিক কারসাজি দেশকে বিভেদ, সাম্প্রদায়িকতা এবং সীমান্ত সংঘর্ষের দোলাচলে ঠেলে দেয়, যেখানে মানবতার আর্তনাদ কর্ণকুহরে পৌঁছানোর আগেই হারিয়ে যায় ক্ষমতার কোলাহলে।

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা আজ আর কল্পনায় সীমাবদ্ধ নয়; পারমাণবিক অস্ত্রের ছায়ায় সভ্যতা অস্তিত্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর সঙ্কটের মুখোমুখি। আর্থ-সামাজিক বৈষম্য, দারিদ্র্য এবং বেকারত্ব মানব জীবনের শেকড়কে দুর্বল করে, যেখানে দিনশেষে স্বপ্নগুলো কেবল হতাশার ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়।
নারী নির্যাতন, ধর্ষণ এবং শোষণের নির্মম চিত্র মানবিকতার মূল্যবোধকে কলুষিত করে চলেছে। ন্যায়বিচারের বিলম্বিত প্রবাহ ও আইন-শৃঙ্খলার দোদুল্যমানতা সমাজের নৈতিক অবক্ষয়ের স্পষ্ট চিত্র তুলে ধরে।

প্রকৃতিও আজ বিষন্ন; জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমাগত সংকেত যেন প্রকৃতির সুদূর ভবিষ্যতের এক নিঃশব্দ সতর্কবার্তা। পৃথিবীর আকাশে ঝুলছে অস্তিত্বের চরম সংকটের নিঃশ্বাস, আর অন্তরের গভীরে প্রতিধ্বনিত হয় এক প্রশ্ন—মানব সভ্যতার এই বিপর্যয়ের অন্তরালে কি নতুন ভোরের আলো জ্বলে উঠবে? নাকি সময়ের অতলে সমস্ত স্বপ্ন ভেঙে পড়বে চিরকালীন নীরবতার বুকে?
—এই প্রশ্নই সময়ের গভীরতম অন্বেষণ। আর এই অন্বেষণ যাত্রার প্রতিটি বাঁকে বাঁকে যা কিছু ধরা পরেছে তারই সমন্বয় গড়ে উঠেছে
'যেখানে নীরব ঈশ্বর '