অষ্টাশিতেও আমার দাদুর দাঁতগুলো সব সাজানোই।
স্মৃতির পটেও টনটনে জ্ঞান হারমোনিয়াম বাজানোই।
গাইবেন যখন গান আসরে শুনবে স্রোতা দম ধরে,
একটা শেষে বলবে সবাই পাঁচটা শোনাও কম করে।
সেই দাদু আজ গান করে না; জনসেবায় ব্যস্ত ভাই,
অসুবিধায় পড়লে মানুষ এক ডাকেতেই সামনে পায়।
ধীর গতি তাঁর বয়স ভারে তবুও কথার দাম রাখে,
উকিল পুলিশ হোক না যে হয়; বেপরোয়া ভয়টাকে।
যে কাজেতে হাত দিয়েছে, জয়ের কেতন উড়েই সেথা।
আইন কানুন ভরতি পেটে, আসল তিনি স্বাধীন-চেতা।
দেশের কাজেই প্রাণ বিলোবেন এই শপথই তাঁর মনে,
তাই বাড়ি তাঁর ভরতি থাকে, শরনার্থীই সব-ক্ষণে।
থাকলে ফাঁকা ছোঁকড়া কিছু দাদুর কাছে গল্প চায়,
গল্প শুনে মজাও লুটে আবার কিছুটা শিক্ষাও পায়।
পাড়ার নাতি দশবারোজন বলল হঠাৎ,‘শুনুন দাদা,
‘এই বয়সে এতোই কাজের, মানাচ্ছে না চুলটা সাদা’।  
দাদু বলেন,‘এই বয়সে এমন চুল তো ঠিকই আছে’,
নাছোড় নাতিরা কয়,‘লাগছে খারাপ মোদের কাছে’।
এই না বলে হাত-পা ধরে চ্যাং-দুলিয়ে চলল তারা,
লাগিয়ে কলপ কমালো বয়স, কষ্ট হল চিনতে পারা।
দাদু বলেন,‘তোদের চেষ্টায় আর কিছুটা কমতো যদি,
পেরিয়ে যেতাম সাঁতার দিয়ে সাত সমুদ্র তেরো নদী’।
মৃত্যুমুখো দাদুর কথায় উৎসাহ পেয়ে সকল নাতি,
দেশের কাজে তৈরী তারা সব সময়ের দাদুর সাথী।
কিন্তু হঠাৎ নব্বয়েতে ঠেকলো একদিন দাদুর চরণ,
মৃত্যু দূতের ডাকটা পেয়ে মেনেই নিলেন মৃত্যু বরণ।