আমি বিল,
আজ আমি নিষ্প্রাণ!
স ময়ের ফেরে জলহীন
তাই অস্ত গিয়েছে মান।
এক কালে আমার সবাই তো ছিল-
শামুক আর মাছ, বক, গাঙ চিলও
ডুব দিয়ে হাঁস খেত মহাসুখে
মহা-ভিটামিন গুগলি,
আর সোনা রাঙা পাট খুশি ভরে দিয়ে,
সোজা চলে যেত হুগলী ।
ডিঙি বেয়ে কত যুবক-যুবতি
হাওয়া খেত মহাসুখে,
জেলেরও জীবনে বাঁচার ভরসা
ছিল মোর এই বুকে।
মাঠে মাঠে যত ফসলের মুখে,
ফোটাতাম হাসি আমি।
নানা নামে ডেকে বোঝাতো আমাকে
কতটা ছিলাম দামী।
আজ আমি জঞ্জাল ।
মাটি আর ঘাসে, বিষ-কলমী কাশে
পরে আছি কঙ্কাল।
জলে ভরা সেই সেকালের বিল-
মৃদু বাতাসের হাসি খিল খিল
উবে গেছে মুখ থেকে।
বরষা ভ রসা জলটুকু নিয়ে-
মানুষের মনে তিল খুশি দিয়ে-
তবু চলি পথ আপন খেয়ালে,
ক্ষীণ দেহে এঁকে-বেঁকে।
আজ শুকিয়েছে দেহ ,
আর নাই মোর কেহ!
আছে শুধু সেই বাঁধা ঘাট।  
আমি তাই চুপ,
আজ বদলেছি রূপ,
হয়েছি খেলার মাঠ।
তবু বলি মানুষেরে-
আজ মোর দুখ দেখাবো কেমনে
মম এ বক্ষ ফেঁড়ে ।
অসহায় আমি এলাঙ্গী বিল,
আমার দানের মহা তহবিল,
প্রকৃতি নিয়েছে কেড়ে।