একমুঠো বিশুদ্ধ বায়ুর জন্য
কতো বিদ্রোহ,
রক্তপাত, জীবন ক্ষয়
কতো অরাজকতার শিরচ্ছেদ;
অথচ কোথায় সে আকাঙ্ক্ষিত বায়ু!
কোথায় সে বিপ্লব!
কোথায় সে সাম্যের পথ!


অনাহার জাগ্রত শিয়রে,
হাভাতের ক্রন্দনে কেঁপে ওঠে
আজও আকাশ বাতাস!
হাঘরের চালচুলোহীন
এ কোন স্বপ্ন নগরীর ছবি আঁকা!


গলিপথে ফুটপাতে হাড় জিরজিরে পাঁজরে
যে শিশুটি হাত পাতে,
যার শরীর ঢাকা
পরিণত দেহের শত ছিন্ন কাপড়ে
রোদে পোড়া তামাটে ত্বকে যাদের লোমগুলো
ঠিক যেন শোন পাটের আঁশ--
তাদের জন্য কি দিয়েছে বিপ্লব!


হ্যাঁ পরিবর্তনের প্রদীপ জ্বলছে,
আলোকিত বহু মুখ শুক্লা দ্বাদশীর চন্দ্রিমায়,
পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে জানি বহু পালে,
তা যেন ওপর আর নিচের অনেকটাই ব্যবধানে--
প্রদীপ নিমজ্জিত অন্ধকারে!


আমার জন্য কোথায়
আলো বায়ু আর জল!
কোথায় এক মুঠো সহানুভূতি--
খুঁজছি, খুঁজছি এখনো খুঁজছি!


হাত পেতে ভিক্ষা চাইলেই
হয়তো ক্ষুধার অবসান হয়,
কিন্তু ভিক্ষা আর ভিক্ষুকের অবসান কোথায়?
তাই আমি ভিক্ষা চাই না,
ক্ষুধার মৃত্যু চাই!
বিশ্বাস কর ভিক্ষায় ক্ষুধা মেটে এক বেলার পেটের,
তাই আর ভিক্ষা নয়
ন্যায্য অধিকার চাই!


আমিও নাগরিক,
তাহলে আমি ভিক্ষুক কেন?
আমি ক্ষুধার্ত কেন?
আমি আশ্রয়হীন কেন?
আমি নিরক্ষর কেন?
সবশেষে আমি অবহেলিত কেন?
আমার খাদ্য পোশাক বাসস্থান শিক্ষা স্বাস্থ্য
আরো কত কি--
এগুলো থেকে আমি বঞ্চিত কেন?
আমি অসম আর অপাংক্তেয় কেন?


জানি, উত্তর নেই তোমাদের কাছে,
কারণ আমার প্রাপ্য বায়ু টাই তো
দূষিত করেছো তোমরা
তোমাদের দুর্নীতি আর অসংযমের বিষবাষ্পে,
যা ইতিহাসের এক কালো অধ্যায় হয়ে
লেখা থাকবে
তোমাদের পাপ আর দ্বিচারিতার কথা,
ঠিক মুখ আর মুখোশে
শঙ্খ লাগার মত!


আর আমি বলে রাখছি তোমাদের কে
সুদিন ঠিক আসবে
আসবেই কালের নিয়মে
সময়ের হাত ধরে,
সেদিন নেইকো বাকি আর বেশি
নিপীড়িতের হাতই দেবে নিপীড়নের সমাধি!