তুমি যে বিকেলে বাচ্চাদের নাস্তা বানাও,
আমি সেই বিকেলে
চুপ করে জানালার ধারে বসে
তোমার ছায়াটাকেও হারিয়ে খুঁজি।
তোমার হাতে তখন
চালের হাঁড়ি, তেলের গন্ধ,
আমি ভাবি—
এই সময়টাতে
তুমি যদি আমার কবিতার পাশে এসে দাঁড়াতে…
তুমি জানো না,
তোমার নরম কপালের ঘামে
আমি কত কবিতা লিখেছি।
তুমি যখন সন্তানকে চামচে ভাত তুলে দাও,
আমি তখন তোমার নামে শব্দ সাজাই—
যেখানে লুকিয়ে থাকে
তোমার নিঃশব্দ ত্যাগের ছায়া।
তুমি যে কবিতা পড়ো না,
আমি জানি।
তুমি কবিতা বোঝোও না,
তাও জানি।
তবু আমার প্রতিটি ছন্দে
তুমি আছো—
একটা নোনতা শাড়ির প্রান্ত হয়ে,
একটা হাঁসির ছায়া হয়ে,
একটা ক্লান্ত বিকেল হয়ে।
তুমি সংসারের গান গাও—
বাচ্চাদের বই গুছিয়ে রাখা,
নিমকি ভাজা,
ভাত রান্নার মাঝখানে ঘামের ফোঁটা মুছে ফেলা—
এগুলো তোমার কবিতা,
যা কেউ পড়তে জানে না,
শুধু আমি টের পাই।
আর আমি…
তুমি ভাবো আমি কবি,
তুমি ভাবো আমি লিখি ফুল আর বিকেল,
কিন্তু না,
আমি আসলে লিখি
তোমার অদৃশ্য হাতের ছোঁয়া,
তোমার নিঃশব্দ ভালোবাসা।
তুমি সংসার টানো,
আর আমি টানি তোমার অভাব।
তুমি জানো না,
তোমার প্রতি প্রেমে আমি কত অসহায়—
তুমি এক কাপ চা নিয়ে দাঁড়াও না বলে,
তোমার হাতে লেখা কোনো চিঠি না পেয়ে
আমি কাঁদি কবিতার ভিতর।
আমার শব্দে তুমি লুকিয়ে আছো,
একটা ব্যস্ত দুপুরের নিচে,
একটা গন্ধমাখা বিকেলের ভেতর,
আর আমি…
আমি কেবল ছায়া আঁকি
তোমার মুখের স্পষ্ট রেখার পাশে।



২৩ এপ্রিল ২০২৫ | সন্ধ্যা ৭:৫৮ মিনিট