আজ তোর জন্মদিন
তুই তো অনর্গল কথা বলে যাস
আমার সঙ্গে- শব্দের নয় , ভাবনায়
লক্ষ লক্ষ শব্দও, যা বলে না
তোর চোখ তা এক মুহূর্তে  বলে দেয়।
আমি তোর, মা-বাবা, ভাই-বোন
কখনো কখনো বন্ধুও হয়ে যাই।


জন্মগত বন্ধনে আমি জিম্মি নই
আমি সত্যিই, তোমার ভালবাসার
অত্যাচারে ভাসি।
কাতর আহ্বানে আহত হই
তোমার দাবির দাপট নেই
তবু দিগন্তব্যাপি নরম সোনালী
তোমার ভালবাসা।


বিকৃত অহংকারী, যে জন্মদাতা
আমি তারে বলি আহত মানুষ
তোর মতন দেব শিশুর ভালবাসা,
দেখার চোখ তার নেই।
আমি শুধু জন্মদাত্রী মা তোর নই
তোর দাস, তোর ভালবাসার কাঙাল।


আজ তোর জন্মদিন
শতো বছর বাস কর আমার মধ্যে
গোধূলির মতন শান্ত দিঘির মতন
আমি ক্লান্ত হবো না।
মা শব্দটা, আমায় মাদকতার মতন টানে
হাসির বানে, সব কষ্ট ভুলে যাই
অলিখিত নিয়মেই, আঁড়ি পাতি
যেন, আরো বহুবার ডাকো, মা, মা বলে


মা, আজ তোর জন্মদিন
নাকি আমার?
গলা জড়িয়ে , বুকের পরে ঝাঁপিয়ে
বলতি, আমার কেক কই?
মা, আমার নতুন জামা কই?
সেই শব্দ বুননের চাদরে
আমার মনটা আজ ঢাকা
কান্না গুলো যত্ন করে চাঁপা।
তবু কি নিদারুন উত্তেজনা!
বেঁচে  থাকা, আর বাঁচিয়ে রাখার স্বাদ।


আজ তোর জন্মদিন
যে পাশন্ডের বিচার করতে পারিনি,
পরকালে তার শোধ নিস্।
আমি তোর মেয়ে হয়ে ক্ষমা চাই লক্ষবার
মা হয়ে কোটি বার।
তোর ভাষা, বসা, হাটা
বিধাতার কৃপণতা,
কেউ যখন বলেতোরে অটিজম,
মৃত্যুর তুহিন শীতলতা ছুঁয়ে যায়,
এ যেন বিধাতার নির্দয় অত্যাচার।


আজ তোর জন্মদিন,আমারও
মা হওয়ার অনুভূতির জন্ম
বেঁচে থাকার প্ররণা।
কথা না বলেও শব্দের কারিগর তুই
ও মা, তুই যে আমার বড় যাদুকর।