বোধমুক্তি
-------------
বোধের সমুদ্রের ও পাড়ে তোমার সাজানো সংসার।
তোমার ঝাপসা চোখে এ পাড়ের সব যেন মরীচিকা মায়া!
সমুদ্রের নোনা জল ফুলে উঠে কখনো -
তোমার নির্মোহ আচরণে!
ভয়, বিমোহ, নাকি অপ্রয়োজনে তোমার উদাস চলা -
এই চরাচরে তা ছিলো দুর্বোধ্য।
অথচ তোমার চোখের মায়ার জালে,
আটকে আছি সহস্র বছর ধরে।
তোমারই দেয়া ছিলো সেই মায়ার বাঁধন -
তোমার জ্ঞানে অথবা অজ্ঞানে।
তুমি কখনো ছুটে চলো মুক্তিতে, পরম আনন্দে।
ঝিনুক, শামুক কুড়াও সমুদ্রের বেলাভূমিতে।
ঝিনুকের মুক্তোর মাঝে দেখো আমার চোখ।
আমাদের হয় চোখাচোখি।
ভীষণ আদরে বুকের ভাঁজে আগলে রাখো সেই ঝিনুক।
আরাধ্য প্রশান্তি চুমে যায় আমার সারা শরীর।
তোমার উষ্ণতায় চোখ মুদে সুপ্তিতে।
তন্দ্রাবেশে তোমার অনামিকা জড়ায় আমার দুই ঠোঁটের ভাজে।
তুমি উধাও হও ভূমি হতে শূন্যে।
রামধনুর লাল রঙে দেখি
তোমার কপাল, আবির রঙা টিপে।
কখনো খুঁজে পাই তোমায় -
মিহি মসলিনের ভাঁজে, মেঘ মায়ায় অপ্সরা সাজে।
কায়া মূর্তি কখনো তোমার দুয়ারে স্থির দাঁড়িয়ে!
অপলক দৃষ্টি তোমার জানিনা কোন অরণ্যে!
রহস্যের কপাট বন্ধ থাকে দিনের পর দিন।
তুমি যাও সমুদ্রে চর ফেলে,
ফিরে আসো আবার সেই সমুদ্রের ডাকেই।
আসোনা কখনো এ পাড়ে চন্দ্রমূখী ঘরের টানে।
বোধের সমুদ্রে যেদিন উন্মাতাল ঢেউ দেখবে,
সেদিন সত্যিই তুমি আসবে তোমার নিজ গৃহে।
অধিকারের প্রতিটি শ্বেত পাথরে দেখবে,
যত্নে খোদাই করা তোমারই নাম ফলক।
তোমার ঔদাস্যে গড়া অসম্ভবের ভ্রান্তিগুলো,
গলে গলে পড়বে চকচকে মেঝেতে।
তোমার ঝাপসা চোখে যখন চৈতন্যের আলো পড়বে,
তোমার বন্ধ বোধের কপাট খুলে যাবে নিমিষেই।
তুমি খুঁজবে আমায় উদ্ভ্রান্তের মতো এদিক সেদিক।
খুঁজবে তোমায় নিয়ে লেখা -
আমার মহাকাব্যের প্রতিটি শব্দে।
আমি হয়তো তখন তোমারই ঘরে
স্মৃতির এলবামে শেষের পাতায় বন্দী।