স্মৃতির জানালায় নিত্য ভাসা-
তোমার প্রিয় পদ্মপুকুর ঘাট।
আমি বারবার ফিরি তারই মায়ায়।
যদি পাই দেখা তোমায় ভ্রমেও কোনদিন !
যদি দেখি পুকুর জলে তোমার নুপুরের জলকেলি !
যদি দেখি হাওয়ায় ভাসা তোমার শাড়ীর আঁচল !
একদা এখানে বসতো হংসমিথুনের মেলা।
কালের উড়িয়ে যাওয়া ধুলোর স্তর পড়েছে আজ এখানে।
ঘুণে খেয়েছে কড়ই কাঠের সিঁড়ি।
আরশোলা আর পোকামাকড়ের বসতি এখানে সেখানে।
অযত্নে পরিত্যক্ত পদ্মপুকুর আজ!
পদ্ম ফোঁটে না পুকুরের জলে।
চোখে ভাসে হিজলের গা ঘেষে মুখোমুখি বসা,
অমাবস্যায়ও মিলতো যেখানে চন্দ্রপ্রভা।
ভীষণ খরায় মনের সার্শী ভিজতো বৃষ্টির জলে।
শহরময় ভ্যাপসা গরমে যখন প্রাণ ওষ্ঠাগত,
এখানে বইতো তখন দখিনা হাওয়া ঝর্ণার মতো।
তোমার চোখের তারায় ভাসতো গোটা পদ্মপুকুর।
এখানে সন্ধ্যে হলে এখনো জোনাকির হাট বসে।
ওরা খুঁজে ফিরে তোমার গায়ের গন্ধ।
সুনসান নীরবতায় মিশেছে আজ,
সময়ের সব কোলাহল।
দূরের ল্যাম্পপোস্টটা ঘন কুয়াশার মাঝে
মাথা নুয়ে যেন শোকের মাতম করে এখন।
রাস্তার পাশের পাইন গাছগুলো স্থির মূর্তি দাঁড়িয়ে।
শোকের ছায়ায় ঢাকা শোকার্ত পরিচিত পাড়া!
এই ঘাটে তোমার পা পড়বে না আর কোনদিন জানি।
বাতাস জুড়ে ভাসে শুধু সেই হাহাকার !
তোমার ঠিকানা লিখেছো আজ অচেনা ভিন্ন গ্রহে।
লিখেছো নিজের নাম লক্ষ তারাদের ভীড়ে।
নিশি জাগা পাখির নিত্য ভোর হয় এখন,
ঘুমন্ত তারার বাগানে।