এখনো বেঁচে আছি!
বেঁচে যাই প্রতিদিন নিয়ম করে!
নিজেকে টেনে আনি লাশের মিছিল থেকে,
যেখানে নিত্য মানুষ মরে গণিতের নিয়মে,
যেখানে নিত্য মানুষ ভোগে সকল নিয়ম ভেঙ্গে,
যেখানে উপদ্রবহীন পৃথিবীর কোলে পড়ে আছে
অগণিত মৃত সন্তানের নিথর দেহ।
সেখানে শান্ত ধরনীর তর্জনী ধরে আছে আমার হাত।
এখনো বেঁচে আছি মহামরণকে আলিঙ্গন করে।
বেঁচে রই প্রতিমুহূর্তে ধ্বংসলীলার মাঝখানে।


প্রলয়ের সাইরেন বাজে
পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে।
তারই মাঝে সমুদ্রের নীল জলে সাঁতার কাটি।
বুভুক্ষু মানুষের চিৎকার কেটে হেটে যাই
ভীষণ স্বার্থপরের মতো কখনো।
কান্না চাপি নিজের তির্যক ছায়ার বিস্ময় দেখে।
বালুকাবেলায় জীবনের নাম লিখি ভীতু আনন্দে।
মাটির দীপালি জ্বালিয়ে নিশীথ রঙে চোখে স্বপ্ন আঁকি।
চাপা কষ্টগুলোর উপর মোটা আসন পেতে বসি।


আরো প্রেম, ভালোবাসা আছে বুকে অস্পৃশ্য।
সমস্ত ঢেলে শূন্য হয়ে পূর্ণতা চাই এ যাত্রায়।
সারারাত ধরে প্রিয়তমার উঠোন জুড়ে
শিশিরে নকশী বোনা শেষ করতে চাই এবার।
মাকড়সার মতো হৃদয় খামচে যেমন আঁকড়ে থাকে সে
তার প্রতি বড্ড লোভ আছে মনের কোণে।


বেঁচে গেলে ভালোবেসেই মুছে দিতে চাই
বৃক্ষের গায়ে লেগে থাকা ভয়,
নদীর বুকে ভাসা কষ্টের বর্জ্য,
সবুজের গায়ে মাখা অপ্রতিম হলুদ চিহ্ন,
বাতাসের বুকের দীর্ঘশ্বাস আর কান্নার শব্দ,
হরিণের চোখেমুখে আতংকের বিভীষিকা,
লোমশ বুকে পড়া প্রেয়সীর অভিমানী অশ্রু।


এখনো বেঁচে আছি!
বেঁচে যাই রোজ নিঃসঙ্গতার সঙ্গে গল্প করে।
বেঁচে ফিরি মৃত উপত্যকার খুব কাছ থেকে,
ডুবে যাওয়া জাহাজ থেকে ফেরা
মুমূর্ষু নিখিলের হাত ধরে।