সেই হৃদয়খানি কোমল কাদামাটি ছিল।
হাতের তালুতে সযত্নে রেখে
তার সমান সঙ্গী হওয়া যেত।
বিক্ষুব্ধ পৃথিবীতে সে আমার
প্রেমিকা হতে পারত।
তুমুল প্লাবনে অবনত হাতে
আমার তলিয়ে যাওয়া মুখটা
তুলে ধরতে পারত।
জনসমুদ্রে উচ্চ কণ্ঠে উত্থিত হাতে
অভিমানে হারিয়ে যাওয়া মানুষটাকে
নিশ্চিত খুঁজে নিতে পারত।
সেই হৃদয় মেঘের মতো কোমল ছিল।
সেই হৃদয় বজ্রের মতো কঠিন ছিল।
দ্বিপ্রহরে কড়া রোদের মধ্যে
সে আমার ছায়াতরু হতে পারত।
শত্রুর তাণ্ডবে ত্রিশূল হাতে রুদ্রমূর্তি হতে পারত।
সেই হৃদয়ের প্রকোষ্টে খরস্রোতা এক নদী ছিল।
আমার সকল অবসাদ খড়কুটোর মতো
ধুয়ে মুছে ভাসিয়ে নিতে পারত।
আমার বিষণ্ণতায় সে ছিল দুরন্ত প্রেরণা।
আমার উচ্ছ্বাসে সে ছিল সদাহাস্য।
আবছায়ায় ইতিহাসের ধূসর পাতাগুলো
উল্টে দেখি এখন রোজ রাতে।
শেষ পাতায় এসে থমকে যায়
আমার অবসন্ন নিষিক্ত চোখ।
হৃদয় ভাগাড়ে আজ পঁচা মাংসের গন্ধ।
নিশুতি কাব্যে তার ছাপ লেগে যায় অজান্তেই।
আমার বিদ্রোহী শব্দরা মিছিল করে
আমার কলমের রক্ত শুষে শুষে।
কার জন্য লিখি এই কবিতা!
শেষের লাইনগুলো আর লেখা হয় না শেষে
আমার অসমাপ্ত পান্ডুলিপিতে।