যমুনার তীর।
নিবিড় প্রশান্ত বৃক্ষ তল-
কতবার ফিরে ফিরে এসেছি
তোমাদের মায়ায়, ছায়ায়!
ঝরা পাতার মর্মর ধ্বনি
শব্দ সফেন তুলেছিলো আমার কর্ণকুহরে।
নদী জলে বিছিয়ে ছিলো নীলাম্বরীর নীল আঁচল।
ভোরের ঘুম ভাঙ্গা কৃষকায়া কিশোরীর এলোকেশ ছড়ানো ছিলো সেখানে।
ঝিনুক খোলা চোখ আর কুয়াশা মুখশ্রী
শীতভোরের মিঠেকড়া রোদের মতো
পড়েছিলো আমার গায়ে।
হাসিটুকু আলিঙ্গন করে রেখেছিল আমাকে।
আমায় ক্ষণিক সময়ের প্রশান্তি দিয়েছিলো সে।
আমায় হাত ধরে ভালোবেসে
ডুব দিয়েছিলো নীল জলে।
কাঁটা তার তুলে অবাধ প্রেম
আমার মাথা ছুঁইয়ে দিয়েছিলো তার বুক,
অধর ছুঁয়েছিলো অধর।
অতঃপর নিয়েছিলো আবার সেই জঞ্জালের শহরে।
কেঁদেছে নদী জল আছড়ে পড়ে।
বুনো শালিকের দল মায়াজাল ফেলে
ঘিরে ধরেছিলো আমাদের।
স্বজন হারা বেদনায় নীল হয়েছিলো
সবুজ অরণ্যের বুক আর
বিমর্ষ নদীর এপার ওপার!
ওরা বলেছিলো - আবার কবে আসবে?
নির্বাক চোখ বর্ষার বৃষ্টিতে ভেজা
লাল পাপিয়ার মতো অসহায়, স্থির ছিলো।
বুকের স্পন্দন ছিলো নিভে যাওয়া
বাতিঘরের বাতির মতো নিষ্প্রভ।
কোলাহল ছেড়ে আজ আবার সেই
বৃক্ষের ছায়া তলে দাঁড়িয়ে, সবুজ অরণ্যের কাছে।
নদীর নীল জলে পা ছুঁয়ে, বিষম নিরবতার মাঝে।
সবই আছে ঠিক আগের মতোই!
কেবল শকুন খেয়েছে শালিকের মায়া!
নীল আঁচলটুকু ভাসছে
কিশোরীর ভেসে উঠা মৃত দেহের পাশে।