আমার আত্মা এখন এক নির্বাসিত কাশ্মীর -
সেখানে একসময় প্রেম এসে বসতি গড়েছিল,
তুমি ছিলে সেই রূপসী নগরীর রাণী।
আর আমি প্রতিদিন পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে গেছি
তোমার পায়ের কাছে,
নিজেকেই অর্ঘ্য করে।
তোমার যাওয়ার পথে -
আমি রয়ে গেছি সেই দেবদারুর মতো অটল বৃক্ষ,
যার শেকড় বিস্তৃত হিমালয়ের গভীরে।
যার অস্তিত্ব মাপা যায় না কোনো ছায়ায়,
মাপা যায় এক নিঃশব্দ উপস্থিতির মতো -
যেখানে মৌনতাই একমাত্র ভাষা।
তুমি ধীরে ধীরে গুছিয়ে নিয়েছো নিজেকে,
তোমার নতুন জীবন সৃষ্টির প্রতিটি প্রহর জুড়ে -
নীরবতায়, সমান্তরালে, অলক্ষ্যে।
আমি জানতেও পারিনি কবে তুমি
যুগল চিত্রলিপি থেকে নিজেকে
আলাদা করে ফেললে,
এবং একা একা লিখে ফেললে
একটি পৃথক জীবনলিপি,
আমার অনুপস্থিতিতে।
আমি তো এখনো সেই বীণা -
যার প্রতিটি তারে বাজে
তোমার অশ্রুত উচ্চারণ।
তাকে হুট করে থামানো যায় না -
তার প্রতিধ্বনি গড়ায় সময়ের পাড় ছুঁয়ে
মহাকাল পর্যন্ত।
আমার প্রেম কোনো দৈহিক আশ্রয় নয়,
সে এক আধ্যাত্মিক স্থবিরতা -
যার শূন্যে মিলিয়ে যেতে সময় লাগে,
নীরব অনুশীলন লাগে,
আর নিজেকে শূন্য করে তোলার
দীর্ঘ সাধনা লাগে।
আমি নিজেকে গুছিয়ে নিচ্ছি -
নিজের মতো করে, নির্জনে, নির্বাণে।
প্রতিটি চূর্ণ হয়ে যাওয়া মুহূর্তকে
আবার শূন্য থেকে নির্মাণ করছি,
যেমন নীরব ধ্বংস শেষে
কোনো একান্ত সন্ন্যাসী
নিজের নিঃশব্দ ধ্যানে গড়ে তোলে
নতুন এক জগত।