|এই হাসি...
কোন বন পাপিয়ার হৃৎপিণ্ড থেকে
টুপ করে খসে পড়া আগুনে বিভা -
অতঃপর ভূবন মাত করে ধেয়ে ভেসে আসা
নৈশব্দের মুখরতা নিয়ে
আমার চৈতন্যের গলিতে!
লোকলাজ ভুলে আমি অবসাদ নিয়ে হাঁটি,
হাসি স্পর্শ করি, হাসিকে স্বাগত জানাই,
পরম আলিঙ্গনে হাসি গায়ে মাখি!


এই চোখ...
অসীম শুন্য থেকে মাটিতে নেমে আসা,
ঘনকালো মেঘপুঞ্জের সাথে
নীলাম্বরীর প্রগাঢ় প্রেমগাঁথা!
আমার ক্যানভাসে,
নিমগ্ন তুলির আচড়ে,
রচে যায় কেবলই তার অনিঃশেষ মহাকাব্য!
আমি ডুবি সেখানে আমার তিন কাল নিয়ে!
আমার সমগ্রকে সমর্পন করি,
অবগাহনে চুপচুপে ভিজি আমি,
শুরু থেকে শেষ অবধি!
মরন্মুখী স্পন্দন থামে হৃদয়ে আমার!
আমার অবশেষ থাকে প্রবল প্রশান্তি!


এই ওষ্ঠাধর...
লগ্নশেষে প্রবাহমান নদী জলে
আগুনরাঙ্গা সূর্যসঙ্গম!
মিলন মেলায় পড়ন্ত বিকেলের
চিকচিকে মাখামাখি!
আমার মন রাঙ্গে, দেহ বাঁকে,
উচ্ছ্বাসে, পুলকে, অঙ্গুলি ছোটে,  
আঁচড়চিহ্ন আঁকে,
স্যাঁতসেঁতে বালিয়াড়ির বুকে!


এই চুল...
আমার নিশি বেলার কষ্ট যেঁচে কষ্ট কেনা
প্রেয়সীর বাঁধভাঙ্গা প্রেম!
জ্যৈষ্ঠের দুপুরে দাবদাহে পোড়া
জলন্ত মুখের উপর তুমুল বেগে আছড়ে পড়া
প্রশান্তির জলফোঁটা।
আমার নয়ন মুদে, হৃদয় দোলে,
শিহরিত দেহবল্লভ তার পরম মমতায়।


এই হৃদয়...
বর্ষার টলটলা জলে -
ঝাঁকবাধা মরাল মরালীর উষা'র উন্মাদ উচ্ছ্বাস!
শরতের আকাশে ভাসা বিমল নির্মলা মেঘরাজি!
শুভ্র কাশের বনে মৃদুমন্দ, মৃদুলা হাওয়া!
হেমন্তে শস্য মাটিতে কিষানীর লেপ্টে দেয়া
কোমল কাদামাটির নিখাদ ঘ্রাণ,
নবান্নের উৎসব, আনন্দের আতিশয্য !
শীত ভোরে শুভ্র কুয়াশার চাদরে ঢাকা
কল্পলোকে ভেসে বেড়ানো
পরিপাটি সুরম্য বিস্তর এক সাম্রাজ্য,
উন্মোচন কারো অপেক্ষায়!


কাল হতে অন্য কালে এসে ঠেকেছে,
আমার অপেক্ষার অন্তহীন প্রেম।
হৃদয় ভরপুর ঐশ্বর্য নিয়ে তোমারই ঐশ্বর্যের খোঁজে !
প্রত্যয়ী হাত প্রসারিত দিগন্ত ছুঁয়ে।
যদি ছুঁয়ে দাও হাত,
চলে যাই অমৃতলোকে!