তবে কি নীরব নক্ষত্রের মতোই
তুমিও হারিয়ে যাবে সঙ্গোপনে
দূর আকাশের অচিন রহস্যের মাঝে?


তবে কি নৈঃশব্দের অতলে তলিয়ে যাবে
তারাদের মতো জ্বলজ্বলে লক্ষ কোটি
শব্দের আনন্দ আলাপন?


কিছু দুর্মর শব্দের কাছে পরাভব মানবে কি
আমৃত্যু কাছে থাকার যুগল প্রতিশ্রুতি?
আর সহস্র রাত জমানো বিভোর সুখের উন্মাদনা?


অনাহুত যুদ্ধে
কাঁচের দেয়ালের মতোই ভেঙ্গে পড়বে কি
হাজার বছরে গড়া স্বপ্নের অনুপম প্রাসাদ?


জানি দিবানিশি জেগে নকশীকাঁথার জমিন জুড়ে
যে স্বপ্নের জাল বুনেছো তুমি তিলে তিলে-
বিদায়ে বুকেই চেপে রেখেছ সেই আলপনার অলংকার।


তোমার পিঠের চাদরে কষ্টের নীল কালিতে
আলগা হরফে লেখা বিদায়ী মতবাদ -
সে তোমার আমার কারোই নয়।


অভিমানের খেয়ায় দুটি পা রেখেছো!
বাতাসের গায়ে নীরব বিলাপের সুর ছড়িয়েছো!
শান্তির মরীচিকা মায়ায় গৃহত্যাগী হয়েছো।


হয়তো ভেবেছো কুয়াশা পথের শেষে
শরতের আকাশে মেঘ সরিয়ে সরিয়ে
দেখা পেয়ে যাবে অনন্ত স্বর্গের সিঁড়ি।


হয়তো ভাবছো এই শ্রাবণ শেষেই পেয়ে যাবে
হিমশীতল দিঘির শান্ত জল
যেখানে দেখে নিবে প্রিয় মুখ নির্জন অবসরে!


তবে যাও চলে!
পৃথিবীর পথ ঘাট প্রান্তর ঘুরে ঘুরে যখন ক্লান্ত হবে
অবসন্ন দেহ এলিয়ে দিও নির্জনতার বুকে।


চির নবীন প্রকৃতির মাঝে তুমিও প্রবীণা নও।
তুমুল ঝড়-ঝঞ্ঝায় বিক্ষত হয়েছ শরীরে মনে।
এখন আর প্রতারিত হয়ো না।


কঠিন দিনের সব রুক্ষতা ভুলে গিয়ে
নবীনের হাত ধরে চলো নতুন করে-
শিউলি, কাশের মতো কোমল স্বপ্ন বুনে বুনে।


নদী জল আর সবুজ সমারোহে মিশে থাকো
জঞ্জালের এই শহরের শব্দদূষণ এড়িয়ে।
খুঁজে নাও নির্জনে একাকীত্বের অপার সুখ-
যেমন তুমি চেয়েছিলে।


নিস্তব্ধতা নিয়ে আমি থেকে যাবো ঠিক সেখানেই -
যেখানে প্রিয়তমার বিদায়ী আঙ্গুল মুক্ত হয়েছিল
আমার আঙ্গুলের শেষ প্রান্ত ছুঁয়ে।