আজ সৃষ্টি নাশের উল্লাসে,
আমার হিয়া কাঁদে আজ, বক্ষ কাঁদে , অশ্রুপাত বড় বিষাদে--
আজ সৃষ্টি নাশের উল্লাসে।


লেলিহান শিখায় প্রাণ ঝরে আজ,
মাতম লাগায় সুখ বনে।
পলাশ রাঙ্গা আগুন যে আজ,
গাছ ছেড়েছে, বন ছেড়েছে, ভাসছে হাওয়ায় জোর তালে,
বইছে সমীরণ, উচ্ছ্বরণ, স্ফুলিঙ্গ আজ নৃত্যে দোলে,
দহন অঙ্গে দাহন করে ছুটছে চলে দিক-দিগন্তে,
লেলিহান ঐ শিখার জ্যোতি যাচ্ছে দেখা দূর-দুরান্তে।
তার জোয়ারেই---
কাঁদছে আকাশ, কাঁদছে বাতাস, কাঁদছে বড় ক্রন্দসী-
নারী-শিশু-যুবা পুরুষ – কাঁদছে দুরন্ত উষসী।
দুঃখে আমার মন হাসে আজ, আঁখিপাত নিঃশেষে
সৃষ্টি নাশের উল্লাসে আজ সৃষ্টি নাশের উল্লাসে।


চারিধারে  ফাগুন বনে
কৃষ্ণচূড়ার অমোঘ খেলা
কেউ জানেনা – থামবে কি তা কোন বেলা?
দমকে-দমকে যাচ্ছে বেড়ে মহাকালীর –মহাত্রাস
দ্যুলোকে-ভ্যুলোকে মহাপ্রলয়ের রাহু-গ্রাস।
রুষে  উঠে শিখা, নিকশ ধোঁয়া, মহাকাশ কম্পমান-
সপ্ত হাবিয়া-নরকের প্রজ্বলন-  ভূ-ধরায় দৃশ্যমান।
তারই মাঝে—
অক্ষয় যারা, অমর যারা, মৃত্যুকে যার নাহি ভয়
যাচ্ছে বেগে-সবেগে , উদ্ধারিতে মানব ক্ষয়—
কষ্টে আমার হৃদয় মাঝে- সপ্ত বীণায় সুর আসে
সৃষ্টি নাশের উল্লাসে আজ সৃষ্টি নাশের উল্লাসে।


(ঢাকার চারিদিকে ফাগুনের মাসে আগুনে পুড়ে ঘর-বাড়ি, বস্তি, গার্মেন্টেসের অসংখ্য মানুষের মৃত্যুতে লিখিত কবিতা, প্রিয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সৃষ্টি সুখের উল্লাসে অনুকরণে)।