পথ চলতে সেদিন দেখিনু রেল লাইনের ধারে
শত ছিন্ন বস্তি ঘরে কাঁদছে শিশু অনাহারে।
চিঁচিঁ আওয়াজ যেন ছোট্ট মুরগির ছানা,
কতদিন পেটে পড়ে নি যে ভালোমন্দ দানা।


পিতৃহীন তিন সন্তান নিয়ে অভাগা মায়ের বাস
ভেন্না পাতার ছাউনি দিয়ে গড়েছে আবাস,
ঝমঝম বৃষ্টির ফোটা, পড়ছে ঘরে, অঝোর ধারায়
যাচ্ছে ভেসে আপন আলয়, মাতৃমন দিশে হারায়।


ছোট ছোট ছানা গুলো হাওয়ার তেড়ে ভয়ে লুকায়
মায়ের ডানা মস্ত অতি, অসময়েও বুকে আগলায়
অশ্রুধারা যায় যে মিশে, বৃষ্টি বিলাস শোকের ছায়া
অভাগা মায়ের চোখে ভাসে ঐ দূরের সুখের কায়া।


অপুষ্টিতে ভোগা শরীর, চক্ষু দুটো কোটরাগত
বাক হারানো ছোট্ট পুতুলের আকুতি কতশত,
মুঠো ভর্তি কাঁদা মাটি, তাই নিয়ে করে লুটোপুটি
হামাগুড়ি দিয়ে ছুড়ছে ঢিল, করছে কত খুনশুটি।


অন্ধ যে জন, হাত-পা নেড়ে এই কাঁদে এই হাসে
বৃষ্টি নিয়ে হাজার দৃশ্য কল্পনায় তার চোখে ভাসে,
হয়নি দেখা কভু তার ভাই-বোন আর জননীর মুখ
হয়নি জানা এখনো তার অভাগা মায়ের সুখ-দুখ।


অপূর্ব মমতা মাখানো আলো-আঁধারির এই সংসার
অবুঝ ছানাদের নিয়ে মা-জননী জীবন করে পার।
তাদের নিয়ে হাসে-খেলে, তাদের নিয়েই জীবনযুদ্ধ
দুখের সায়র মাঝে সিক্ত-ক্লিষ্ট জীবন অনিরুদ্ধ।  


তারাও মানুষ ভুলে না যাই, শোকে যেন হই কাতর
মানুষের তরে মানুষ হয়ে বাঁচুক সবাই যুগ-যুগান্তর।
সহমর্মিতায় বাড়িয়ে দিলে ভালোবাসার আপন হাত,
অমানিশা কেটে যাবে, জীবনে আসবে নব-প্রভাত।


(সহমর্মিতার সংবেদন)