মুক্তগদ্য


১।
কবি কবি কবি
কে তাকে কবি বলেছিল কে জানে ?
নাকি নিজেই নিজের ভেতরে ঘাপটি মেরে থাকা কবিস্বত্তাকে বুঝতে চেয়েছেন।
দারিদ্র আর কবিতা কি হাত ধরাধরি করে চলে ?
তবে এই কবির তাই।
টাকা নেই , শিক্ষাগত যোগ্যতার কোন কাগজ নেই , বাবার রেখে যাওয়া সম্পদ নেই । আছ শুধু শুণ্যতা । তিনি ঘুরে ফিরে কলম আর কাগজ নিয়ে বসেন ।
গুটি গুটি অক্ষরে লেখেন শব্দের বর্ণময়তা ।
কাটাকুটি করেন ,আবার লিখেন্‌ ,আবার কাটাকুটি আবার লিখা ।
নাহ এবার এটিকে একটা গ্রহণযোগ্যতায় দাঁড় করানো গেছে ।


সকাল বেলাটা দোকানের চা আর পাউরুটি খেয়ে কাটানো গেছে ।
দুপুরবেলা কি খাবেন এটা মনে হতেই তিনি হতাশ হলেন । চাল ছাড়া আর কিছু নেই যে ভাত দিয়ে খাবেন । মাঝে মাঝে চোখে জল
আসে । হা – কেন যে এই বঞ্চনার জীবন । চারপাশে তাকালেন ঘরের । একটা বিছানার চাদর অবহেলে এলোমেলো হয়ে বিছানায় পড়ে আছে । ঘরের আর এক পাশে এক গাদা বালি । পাশের বাড়ী ওয়ালা রেখেছে । এখানে যে একজন মানুষ থাকে এটা হয়তো কারো মনেই থাকে না ।
২।
বঞ্চনার জীবন কবির হয় ! কেন ? কেন ? কেন ?
কবি এই প্রশ্ন নিজেকে করে করে ক্লান্ত হন । তিনি আজ অবশ্য ভীষন খুশী ।
গ্রামে এসেছেন অনেকদিন পর।
এই গ্রাম তাঁর মা – তাঁর আত্মা ।
এই বর্ষায় তাঁর বাড়ির পাশের বিলটা হয়েছে দেখার মত । বিলের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি বুক ভরে শ্বাস নেন । মেঘ ভরা আকাশ দেখেন ।
পুকুর গুলো কানায় কানায় পরিপূর্ণ ।
গাছগুলো চিকচিকে সবুজ । পাতায় পাতায় কলোরোডা নদীর ছোয়া ।
তিনি আনমনে হাঁটেন । গাছে গাছে চুঁইয়ে পড়া পাতার জল তাঁকে শান্তির সুবাতাস দেয় ।
আকাশের মেঘগুলো বুঝি নেমে আসে তাঁর পায়ের কাছে ।
তিনি যেন মাড়িয়ে যান সব মেঘদল , ঘাসফুল আর লজ্জাবতী পাতার সব লজ্জা ।