৭১.


আমার ক্ষণিক জীবন হেথায় যায় চলে ঐ ত্রস্ত পায়
খরস্রোতা স্রোতস্বতী কিংবা মরু-ঝঞ্ঝা প্রায় ।
তারই মাঝে এই দু'দিনের খোঁজ রাখি না-- ভাবনা নাই,
যে গত-কাল গত, আর যে আগামী-কাল আসতে চায়।


৭২.


আর কতদিন সাগর-বেলায় খামকা বসে তুলব ইঁট !
গড় করি পায়, ধিক লেগেছে গ'ড়ে গ'ড়ে মূর্তি পীঠ ।
ভেবো নাকো_ খৈয়াম ঐ জাহান্নামের বাসিন্দা,
ভিতরে সে স্বর্গ-চারী, বাহিরে সে নরক কীট ।


৭৩.


মধুর, গোলাপ-বালার গালে দখিন হাওয়ার মদির শ্বাস,
মধুর, তোমার রূপের কুহক মাতায় যা এই পুষ্পাবাস ।
যে গেছে কাল গেছে চলে, এলো না তার ম্লান স্মৃতি,
মধুর আজের কথা বল, ভোগ করে নাও এই বিলাস ।


৭৪.


শীত ঋতু ঐ হলো গত, বইছে বায় বসন্তেরি,
জীবন-পুঁথির পাতাগুলি পড়বে ঝরে, নাই দেরি ।
ঠিক বলেছেন দরবেশ এক, "দূষিত বিষ এই জীবন,
দ্রাক্ষার রস বিনা ইহার প্রতিষেধক নাই, হেরি ।"


৭৫.


'সরো'র মতন সরল তনু টাটকা-তোলা গোলাপ-তুল,
কুমারীদের সঙ্গে নিয়ে আনন্দে তুই হ মশগুল ।
মৃত্যুর ঝড় উঠবে কখন, আয়ুর পিরান ছিঁড়বে তোর--
পড়ে আছে ধুলায় যেমন ঐ বিদীর্ণ-দল মুকুল !


(কাব্যগ্রন্থঃ রুবাইয়াৎ-ই-ওমর খৈয়াম, ফেব্রুয়ারী ২০১০, প্রকাশকঃ বিশ্ব সাহিত্য )