বাবার কর্ম
--------------
-----নজরুল ইসলাম খান


হঠাৎ উঠে যদি বাবা এসে বলে,
বড় বিপদে আছি সোনারে ,
একটু ব্যবস্থা নে ।
উত্তর ডাঙ্গার যে পাঁচ বিঘে জমি ,
জানিসতো পুরোটাই কেনা বাকীতে ।
দরজায় এসে কত দাঁড়িয়ে কেঁদেছে,
হারাধন বনিক,
একটি পয়সাও দিইনি তারে ।
শেষে ফেলে দিয়েছি ফাঁকিতে,
কষ্টে -দুঃখে গেছে দেশ ছেড়ে ।
তোকে পড়ানোর সময় ,
সহজ সরল কৃষক জমির আলীর কাছ থেকে
টাকা নিয়েছি দশ বিঘা জমির বন্ধকি বাবদে,
ঋণ শালিসির ফেরে ফেলে,
পুরোটাই দিয়েছি মেরে ।
পাগল হয়ে রাস্তায় ঘুরে ঘুরে ,
জমির আলী অবশেষে গিয়েছে মরে ।
যে বাড়িতে এখন তুই থাকিস, দোতলা বাড়ি ,
দিয়েছিলাম সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে ।
রিলিফ আরও কত কী ওরে!
গরীবকে করেছি বঞ্চিত না দিয়ে ।
আজ হিসাব করা যাবে না তা ধরে ধরে  ।
যুদ্ধের সময় আমার কাছারি ঘরে ,
বিশ্বাসের দাবীতে রক্ষিত যত মাল ,
দিইনি ফেরত কোন চাঁদকে,
নিয়েছি নিজের করে ।
আমার যা কিছু সম্পদ ,
সব দিয়েছি লিখে তোর নামে  ।
এত কষ্টের ধন আমার ,
নিয়ে যাবে পরের ঘরে,
তাই তোর বোনদের
দিয়েছি বাদ গোপনে।
এখন মৃতের জগতে ,
সবাই ধরেছে এসে আমাকে।
চামড়া মাংস ছিড়ে নেবে আমার৷।
সবইতো করেছি তোর জন্যে ,
ঘোর বিপদে আছি এখানে ।
তুই পরিশোধ করে দে, দেনা গুলো আমার ,
নয়তো পাবনা পার  বিচারে।
বাবার কর্মে ব্যথিত আমি ,
কী উত্তর দেব আমি বাবারে ?


১৮/০৫/২০২২