মেয়ের মমত্ব
------------
-----নজরুল ইসলাম খান
আমাকে নিয়ে তুমি চিন্তা কোরোনা, বাবা ।
বিশ্বাস রেখো আমার প্রতি ,
কখনও আমি তোমার বোঝা হব না।
ছেলেকে নিয়ে তুমি বড় দুশ্চিন্তায় থাক,
খুব এলোমেলো জীবন যাপন করে সে ।
কখন কোন ঝক্কি এসে পরে তোমার ঘাড়ে,
তাই তুমি সারাক্ষণ অশান্তিতে ভোগো।
আমাকে নিয়ে তোমার সে রকম কোন
দুশ্চিন্তা নেই।
আমি সন্ধ্যার পরে বাইরে থাকিনা,
কোথাও বসে নেশা করিনা,
তোমার পকেট থেকে টাকা উঠিয়ে নিইনা,
কোন সোমত্ত মেয়েকে উঠিয়ে আনার ভয়ও নেই।
আমাকে তুমি এত তাড়াতাড়ি বিয়ে দিওনা, বাবা।
তুমি প্রায়ই ওষুধ খেতে ভুলে যাও,
প্রেসক্রিপশন ধরে ওষুধ গুলো ঠিকমত খাইয়ে না দিলে
তুমি অসুস্থ হয়ে পড়,
তোমার জামাকাপড় গুলো ঠিকমত গুছিয়ে না রাখলে
অগোছালো পড়ে থাকে ,
আমি না থাকলে কে তোমায় চশমা খুৃঁজে দেবে?
কে ধরে দেবে বাজারের ব্যাগ ?
ছেলে বিয়ে দিয়ে বৌ আনলে
সে কি তোমার ঠিকঠাক যত্ন নেবে ?
তোমাকে যথাসময়ে খেতে দেবে ?
তুমি কী খেতে পছন্দ কর ,
কী খেতে চাওনা তা কি বোঝবে?
আমাকে দুশ্চিন্তায় থাকতে হবে।
আমাকে বিয়ে দিলে তোমার জন্য বড় কষ্ট হবে, বাবা।
যদি শশুর বাড়ির লোকজন তোমাকে দেখতে আসতে
না দেয়।
তোমাকে কিছু খাওয়াতে মন চাইলে
যদি তা না পারি ।
যদি ভাইয়ের সংসারে আমাকে অপাংক্তেয় মনে করে ।
আমাকে তুমি এত তাড়াতাড়ি বিয়ে দিওনা, বাবা।
আমি তোমার বোঝা হব না।
বিয়ে যদি দিতেই হয়, তবে এমন ঘরে বিয়ে দিও না,
ষেখানে মানুষের চেয়ে অর্থের মূল্য বেশি ।
তোমাকে ছোট করে দেখে এমন ঘরে তুমি আমাকে
বিয়ে দিওনা।
আমি নুন ভাত খেয়ে থাকি ,
তবু যেন তোমার মাথা উঁচু হয়ে থাকে।
প্রবাসী ছেলের সংগে আমাকে বিযে দিওনা, বাবা।
আমার দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে কেউ আমাকে
অন্য চোখে দেখে ।
আমাকে এমন ছেলের সংগে বিয়ে দিও বাবা,
যাকে আমি সবসময় কাছে পাব,
সুখে দুখে একসাথে থাকব ।
এমন ছেলে তুমি বেছে নিও, বাবা!
যে আমাকে রেখে অন্য মেয়ের প্রতি আসক্ত হবে না।
অযথা বাইরে রাত কাটাবে না।
শাশুড়ী ননদী থাকুক,
কিন্তু আমাকে তারা প্রতিপক্ষ ভাববে না ।
আমাকে তুমি বোোঝা মনে কোরোনা বাবা
আমাকে দেখে শুনে বিয়ে দিও।