আমাকে ওই দূর আকাশ দেখাও  চন্দ্রের দ্বিখণ্ডিত
রূপের রহস্যময় প্রাণ চঞ্চল আলোর
মধ্যে তীক্ষ্ণ রেখা পথ ।
আমাকে দেখাও সমুদ্রের মধ্যে ভেসে চলা জাহাজ
কিভাবে নাবিক ছাড়া মাস্তুলে নিশান
উড়ে পতপত করে ।


আমাকে দেখাও ঝুম ঝুম বৃষ্টির পদধ্বনি ভর দুপুরে
টিনের চালে উঠোন জুড়ে মাঘের
উষ্ণ হাওয়া ।
আমাকে দেখাও পলাশের বুকে রক্তিম ফোটে উঠা
এক গুচ্ছ ফুলের কলির মাঝে
স্বপ্নের আবাসন ।


আমাকে দেখাও বনের মধ্য দিয়ে কেমন করে পথ
চলতে হয়,সামনে যেতে হবে লক্ষ্য
স্থির করে ।
আমাকে দেখাও ওই নীল দরিয়ার পানির স্রোত যা
বয়ে চলে অধীর মনে  আপন নীড়ে
উদাস ধ্যানে ।


আমাকে দেখাও সকাল বেলা গাছের আগায় উদিত
হওয়া সূর্যের কিরণ,আলোকিত করে
দেয় পুরো পৃথিবীকে ।
আমাকে দেখাও সুউচ্চ পাহাড় পর্বত ঝর্ণার জলধারা
নীচে গড়িয়ে পড়ে উল্কার ন্যায়
নদীর কর্ণ ধারে ।


আমাকে দেখাও পদ্মা,মেঘনা, যমুনা,আড়িয়াল খাঁ বিল
কীভাবে জেগে উঠে বালির চড়
দ্বীপের মধ্যে ।
আমাকে দেখাও বর্ষার ঝিরি ঝিরি হাওয়া ফুটন্ত গোলাপের
ভিতর কোমল ঊষার শিশির ভেজা
পূরবী হাওয়া ।


আমাকে দেখাও বিস্তীর্ণ সবুজ মাঠ ঘাট খাল বিল
যেখানে চাষ করে কৃষক ইরি ধান,আমন ধান
মাটি খুঁড়ে ।
আমাকে দেখাও বিরহের মালা গেঁথে বসে আছো আগ্রহী
হয়ে বাগানের ধারের কিনারায় মাথায়
ঘোমটা দিয়ে ।


আমাকে শোনাও লোকানো প্রেমের ব্যথা জমিয়ে রেখেছো
বলবে বলে গোপনে একা একা
নীরবে নিরালায় ।
আমায় শোনাও পূর্ণিমা রাতের ওই কষ্টের কথা হৃদয়ের
অনুভূতির পরম বেদনার বাণী শৈশবের
স্মৃতির শোকগাথা ।


আমাকে শোনাও ওই পুরানো দিনের গান যা আমি শুনিয়েছি
তোমায় পৌষের রাত্রির কালে একাকী সংগোপনে
সব কিছু উজাড় করে ।
কবিতা আবৃতি করে শোনাও আজ  মৃদু কণ্ঠে  চোখের জলে
আমার পাশে বসে পুকুর পাড়ে
মেঘলা দিনে ।