খুন কিংবা হত্যা কর্ম কাণ্ডে
তোমাদের মধ্যে যদি কেউ,
কারো দ্বারা প্ররোচিত হয়ে,
কোন মানুষ হত্যা করতে চাও !
তবে আমাকে হত্যা করো ।
প্রস্তুত তব হে! এ দেহ প্রাণ ,
রক্তের বিনিময়ে রেখে যাব অবদান ।
জেনে রাখো তব হে !
এ মৃত্যু কিংবা হত্যা কাণ্ড-
যে সে মৃত্যু নয় !
এক প্রতিবাদী টগবগ তরুণ কণ্ঠের মৃত্যু ।
ন্যায় প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় সত্যের মৃত্যু ।
অধিকার আদায়ে নিবেদিত,
স্বপ্ন প্রাণের মৃত্যু ।
তোমাদের মধ্যে হয়তো ! কেউ কেউ ,
এ মৃত্যুকে,
শহীদি মৃত্যুর তকমা লাগিয়ে,
ক্ষোভ কিংবা নিন্দায়,
মিছিলে মিছিলে জনতাকে জাগিয়ে,
শ্লোগান মুখরতায় রক্তাক্ত রাজপথ,
মাতৃভক্তিময় প্রিয় দেশটাকে কাঁপাবে ।
বিধবা স্ত্রী ও শিশুপুত্রকে মাতৃকোলে রেখে
নির্লজ্জ ভাবে তোমাদের পাসে দাড় করিয়ে,
শোকাহত অশ্রুজল চোখে ভারাক্রান্ত হৃদয়ে,
সভাস্থল থেকে-
রাষ্ট্রকে হুশিয়ার কণ্ঠে  জানান দিবে,
‘বিচার চাই বিচার চাই ,
খুন হয়েছে আমার ভাই
খুনি তোদের এ বাংলায় ঠাই নাই।'
সভাস্থলে কিংবা সভা শেষে হয়তো !
পুনরায় উচ্চারিত হবে -
‘নুরুল ভাইয়ের আত্মত্যাগ,বৃথা যেতে দেবো না,
২১'আমার চেতনা পদ্মা মেঘনা যমুনা।'
এরপর জনরোষে পুরো দেশময়,
বিক্ষোভ ভাংচুর,উত্তপ্ত রাজপথে আগুন ।
জনতার সেবক পুলিশ, অতি উৎসাহে,
চেতনায় উঠবে জেগে ।
জনতা ও নেতাদের প্রতিপক্ষ হয়ে,
রাষ্ট্রের উপর আস্থা রেখে বুঝাবে,
বিক্ষোভ দমনে আমরা প্রস্তুত,
নিবেদিত রাষ্ট্রের দক্ষ সৈনিক ।
বিরোধীরা সর্বদল মিলে গড়ে তুলবে,
একদফা আন্দোলনে,একছত্র আধিপত্য ।
মূলত তাদের মুল মন্ত্র ও লক্ষ্য,
সর্বদলীয় ছত্র জনতার গনঐক্য ।
ক্রমেতে তাদের নতুন শ্লোগান হবে-
'এক দফা এক দাবী,
স্বৈরাচার তুই কবে যাবি' কিংবা
'দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও ,
হটাও হটাও ফ্যাসিবাদ হটাও'।
শহর গুলোর রাজপথে খণ্ড খণ্ড মিছিল,
প্রতিবাদ জনসভা মানব বন্ধন,
দেশব্যাপী হরতাল অবরোধ,
আন্দোলন দানাবেধে রূপ নিবে
জনতার দীর্ঘ কাতারে ।
ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া,ধরপাকড়,
লাঠিচার্জ গাড়ী ভাংচুর ,
যাচ্ছে তাই ভাবে রাবার বুলেটের ব্যাবহার,
ইটপাটকেল টিয়ারশেল নিক্ষেপ,
অঘোষিত নির্দেশে,
পুলিশকে নিতে হবে কঠিন পদক্ষেপ ।
দোকানপাট অফিস আদালতে অগ্নিসংযোগ,
এক শ্রেণী স্বার্থান্বেষী মহলের অতি উৎপাত,
দাউ দাউ করে এটা ওটা পুড়বে.
কালো ধোয়ায় ভারী হয়ে উঠবে আকাশ বাতাস,
কেউ পাবে কেউ পাবে না,
সরকারি আশ্বাস অনুদান ।
আগুনে পুড়ে কালো লাশ গুলো
অচেনা রূপে আবির্ভূত হবে,
গুরুতর আহতরা বিনা চিকিৎসায়,
হাসপাতালের করিডোরে,হা-হুতাশ করবে,
হতাহতে বেড গুলো হবে শূন্য,
বিশ্ববাসী ক্ষোভে দুঃখে বলবে 'এ দৃশ্য জঘন্য'
আত্মীয় সজন রাজনৈতিক পরিজন,
বিশেষ বড় বড় মন্ত্রীদের ঘটবে আগমন ।
স্তম্ভিত হবে কিছু সময়ের জন্য,
হাসপাতালের পুরোটা পরিবেশ,
থাকবে কিছুদিনের জন্য থম থমে পুরোদেশ ।
পরিশেষে উভয় দলের নেতাদের দাবী উঠবে.
লেলিয়ে দেয়া পেটোয়া বাহিনীর গুলিতে
নিহতরা,দলের নিবেদিত নির্ভীক
অকুতোভয় প্রাণ সৈনিক ।
অপর দিকে মিডিয়া ও পত্রিকায়,
ফলাও করে খবরের শিরোনাম হবে-
'পুড়ছে বাংলাদেশ' ‘ফুঁসে উঠছে জনতা'
'বিক্ষোভে জ্বলছে স্বদেশ'’ অথবা
'সন্তান হারা একাত্তরে স্বাধীন এ দেশ,
খুনরাঙ্গা রক্তাক্ত আমার বাংলাদেশ'
শিরোনামে রচিত হবে এক একটি
অমরজয়ী স্মৃতিকাব্য কবিতা ।