দিনান্তের সঞ্চয় ভরা ক্লান্তি নিয়ে ,
বসে আছি জানালার ধারে হিম হয়ে ।
নিস্তব্ধ অলস আবেশ ভাবুক মায়াপুরীতে ,
নিথর হৃদয় খানি অস্থির একাকীত্বে -
মেতেছে যে হায়,আপন ভাবনাতে ।
চোখ দুটি মোর, উন্মাদ উৎকণ্ঠা আবেশে,
কখন যে পড়েছে টলে শান্ত রূপে অলসে !
চমকে নয়ন তারা দুটি,দেখি খুলি-
রূপের মৌন পরশ নিয়ে রূপসী ধরণী ।
সবুজ মোড়া ঐ ঝাউ বনেতে বুঝি,
সন্ধ্যা বিকেলের নিঝুম রৌদ্রচ্ছটা-
খেলা করে চুপি চুপি আলোর চোখ বুজি ।
মৃদু ছন্দ সুরে সাড়ি সাড়ি বাহারি পত্ররাশি,
যেন ওরা বলে বেড়ায় -
’মোরা তোমাদের পৃথিবীকে বড় ভালোবাসি।'
নারকেল বৃক্ষের বৃষ্টি ভেজা সরু সরু পত্ররাজি
আলতো তে চিকমিকিয়ে বলল হাসি হাসি-
'কেন নীরব মননে দাড়িয়ে বাতায়ন তটদেশে,
কন্ঠহীনা বিমূর্ত শোভা এই বিকেল আবেশে ?’
তিতাস নদের অবারিত জোয়ার স্রোতে ভাসে,
ক্ষীণকায় বেগুনরাঙ্গা কচুরি ফুলেরা হাসে ।
শরৎ বলাকায় সাদা মেঘেরা দলাদলি করি,
সবুজ ছোঁয়া কত না গাছালীকে ছুঁয়ে যায় উড়ি ।
মধুর মমতা ভরা এ শোভা বাতায়ন তটপাড়ে,
অনেকটা সময় যায় কেটে জানলার গ্রিল ধরে।
ঐ দেখা যায়! কারা ওরা ছুটেছে কার  আঙিনাতে,
মোর ফুলবনের ফুল লয়ে রূপের রঙ্গে রাঙ্গাতে ?
পথিক ক্লান্ত দেহ শ্রান্ত ছুটছে তবু ও গৃহপ্রান্ত,
শ্রাবণ মেঘের ঝলমল বিদ্যুৎচ্ছটা-
পথিক তার পথ চলা, মানে না তো মন মনান্ত ।
শ্রাবণ ইথারে চমকিত রুপালী আলোর সারথি,
এ যেন অংশু রাগের প্রভাকর অতুল বসুমতী ।
বর্ষা সিক্ত প্রাণ ভুবনে-
জাগিছে যে আজ প্রাণ অবনীর মনোহারী ঝুম,
চুপ!চুপ!চুপ! ভাঙ্গায়েও না ওর -
স্বপ্নভবী শ্রাবণ রাত্রির প্রেমে ভরা অপরূপ ঘুম ।