শতাব্দীর কোলাহল শহর,
রাতের একাকী চন্দ্রালী প্রহর
হঠাৎ নিঝুম চুপচাপ,
স্নিগ্ধ মায়াবী সাজে নটিনী আকাশ,
ক্লান্তির চোরাবালিতে খুঁজে ফেরে-
মহাকালের কল্লোলিত উচ্ছ্বাস ।


দুরপ্রান্ত হতে উড়ে আসা পরিজাত পাখিদের ,
মাছরাঙ্গা জলে বিনোদন অবকাশ ,
লুপ্তপ্রায় আমার জীর্ণ প্রাসাদ-তুল্য
নির্জন নিঃসঙ্গ একাকী গোপন নিবাস,
প্রাণ খুলে নিতে পারেনা স্বস্তির নিশ্বাস ।


প্রাচীন পৃথিবীর মত ,
উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া ,
দক্ষিণা প্রান্ত ঘেঁষা ছোট করিডোর কক্ষে
দিনরাত্রির,সময় যাপনের চিরকাল অনাথ বসবাস ,
প্রতিটা প্রহর কুড়ে কড়ে খায়-
স্বপ্ন বিলাসী জীবন-তপসী উচ্ছ্বসিত উচ্ছ্বাস ।


অবিরল চেনা হৃদয়ের সমাপ্তহীন জীবন ,
সূর্য প্রতিম স্বচ্ছ নবীন ,
ভেতরে পুঞ্জিভূত হীরন্ময় রঙ্গিন ,
মুক্ত স্বাধীন আমার সমস্ত অভিলাষ,
বিষম মুক্ত পরিসর সত্য-সাধনে-
মাঝে মাঝে জাগিয়া উঠিতে চায়-চেতনায় ।


ধুলোয় সিক্ত আলোহীন ছায়াঘন গৃহে ,
লোনায় আসক্ত প্রতিটি ইটের লহর
বিচিত্র সব শেকড়,সবুজের মহিমায়
জরাগ্রস্ত প্রাচীর বেষ্টিত দালান গুলোয়ে
নানা ঢঙ্গে ঠিকানা গেড়ে মুছে দিতে চায়,
তাহাদের স্বার্থের প্রয়োজনে-
বিবর্ণ সত্তার, আলোড়ন আলোকিত বিলাস ।


জানা অজানা,নানা ভেলকিবাজির চরাচরের
গোলকধাঁধায়, নিপীড়িত জমিন সীমানায়
নিজেকে বেমালুম হারাবার পর,
প্রাসাদ-তুল্য জীর্ণ চিলেকোঠার সরু বারান্দায়
আসা যাওয়ার চলার পথে-
চোখ পড়ে-অবশ মনেতে ভাবায় ,
আর বিবেক সত্তার কাঠ গড়ায়,দাড় করিয়ে
কেবলি-কে যেন কি বলে জানান দিয়ে নাড়াতে চায় ।


দুষ্প্রাপ্য বস্তু সদৃশ অচিন বৃক্ষের গুড়িদ্বারা নির্মিতব্য ,
বৈচিত্র্যময় অতিকায় নান্দনিক বৈঠকি টেবিল ,
অবশ অলসে উপরে পড়ে থাকা,
রক্তে সিক্ত শুকনো একটি পুরনো বর্ণহীন খাম ,
অসম্ভব সুন্দর বর্ণাহস্তে লেখা ,
কালিমা লিপ্ত এক কা-পুরুষের কলঙ্কময় নাম ।


পরখ করে দেখলাম ,
হাতে নিয়ে সময়তে তা যত্ন নিয়ে পড়লাম,
কলম হদয়ের কালো কালিতে লেখা-
আমার ই রক্তে প্রবাহিত সেই অমানুষের
নিষ্ঠুর অত্যাচারের নিঘাতদুর্নাম ।
অন্য একদিন,
জরাজীর্ণ পুরনো এক ডায়রিতে খুঁজে পেলাম,
রক্ষিতা এক রূপবতী রমণীর,
মর্মস্পর্শী সময়ের মর্মান্তিক জীবনাবসানের প্রমাণ ।
যেন এ এক,চিত্রপটে পদ্য আঁকা, কবিতার শিরোনাম ।