সব জন্ম শুভ হয়না মা-  
তুমি জান আমার জন্মও শুভ হয়নি ।
আমাকে জন্ম দেবার পর তুমি তোমার চারপাশে
এমন ভাবে তাকিএ ছিলে --
অমন কষ্ট মাখা মুখটাকেও মনে হয়েছিল রানি ভিক্টোরিয়ার মুখ ।।
মা-  সেদিন কি সত্তিই তুমি নিজেকে রানী ভিক্টোরিয়া ভেবেছিলে ?
উনসত্তের এক আষাঢ়ে ভূমিষ্ঠ ঐ  শিশু তোমার কোলে কোলে
কাটিয়েছে সত্তুর ।
একাত্তরের শেষে  তুমি আবারো একবার আমাকে যুবরাজ বানিয়ে  
নিজেকে রাজমাতা ভেবে ছিলে ?।  
বাহাত্তর তেয়াত্তুরের এলোমেলো সংসার ,
চুয়াত্তুরের মন্বন্তর,  পচাত্তুরের খুনিদের উৎসব,
জাতির পিতার লাল রক্তে রঞ্জিত মাটিতে
নিরন্তর পরাজিতের পদাঘাত  
সয়ে বড় হওয়া আধপেটা খাওয়া না খাওয়া দুরন্ত অথচ দুর্বল শরীর ,
যুদ্ধে যাওয়া পিতার অবিরাম কষ্ট মাখা মুখ “যেন পাপ ছিল যুদ্ধে যাওয়া”
দেখে দেখে বড় হওয়া আমি- আমি – স্বৈরাচারের নিরলজ্জতার বিরুদ্ধে
পিতার মত “যুদ্ধে যাওয়া” গর্ব করা বুক নিয়ে ,
নুর হোসেন ও মিলনের রক্তের ধারা না শুকানো মাটিতে দাড়িয়ে  
নিজেকে মা নিজেকে সেদিন  সত্যিই যুবরাজ ভেবেছিলাম আর
আর তোমাকে  রাজমাতা বানিয়েছিলাম ।।


তারপর পিতার মত ‘যুদ্ধে যাওয়া ‘ অভিমানি  বুক
পিতার কাঁধের ভার নিজের কাধে নেব বলে আমি
অন্যের উচ্ছিষ্ট কুড়াতে কুড়াতে -আজ তোমার চেয়েও ক্লান্ত মা ।

অর্ধেক মানুষ হওয়ার চেয়ে না-মানুস হওয়া অনেক ভাল মা ।
হোক বা অর্ধেক মানুষ কিন্তু বোধটা যেন মানুষের নাহয় ।।
আমাকে ক্ষমা করো মা – তোমার কিছু না বলা নির্বাক মুখ-
আমাকে কাদায় মা – আমাকে কাদায় , আমাকে ক্ষমা করো ।।