নিমাই : যন্ত্রণা আঃ কি যন্ত্রণা
          কানে কানে কীসের এতো মন্ত্রনা
          চারিদিকে কেন এই রটনা ?
          বল শুনি বিমল কি এমন ঘটনা ?


বিমল : শ্যামল নাকি
          দোকান থেকে দিচ্ছে বাকি !
          কেন জানি ,
          সে পাল্টে গেছে অনেকখানি ।


নিমাই : কে করাল রাজি ?
           কি সর্বনাশ ! চলে যাবে সব ফাঁকি ।
           মেয়েটাকে খাওয়াবে কি ? মেয়ের তো হাঁপানি ।
          সেকথা এতটুকুও সে ভাবেনি !


বিমল : জমিদার গগন পাণ্ডা ,
          মাথাটা মোটেও নয় তার ঠাণ্ডা ।
          শুনেছি তিনিও চটেছেন ,
          শ্যামলকে ধরে আনতে বলেছেন ।


নিমাই : তাই নাকি , ভাবছি যাওয়ার পথে
           যাবো শ্যামলের দোকানের দিকে
           দেখি ব্যাটা ,
           কি করে বাড়ালো ঝামেলাটা ।
                                                          (বিমলের প্রস্থান)


শ্যামল : আরে নিমাই কাকা
            যাক বাব্বা , পাওয়া গেল তোমার দেখা
            কেমন আছো ? ভালো ?
            নাকি গেছে সব চালচুলো ?


নিমাই : চালচুলো সবই আছে
           কিন্তু তোর বুদ্ধি সুদ্ধি কি সব গেছে ?
           শোন শ্যামল চলে যাবে সব ফাঁকি
           দিসনে বাকি , নইলে তুই মরবি ।


শ্যামল : কি আর করবো ?
            মরতে হয় মরবো ,
            তবুও তো বলতে পারবো
            ফাঁকি গেলেও সব , ওদের বাঁচাতে পারবো ।


নিমাই : ভেবে দ্যাখ , তোর বাপের তিরী দোকানটা
           এর মধ্যেই কি করেছিস তার হালটা !
           চালটা , তেলটা , নুনটা , ঝালটা
           নেই তো আর , হচ্ছে ফাঁকাটা ।


শ্যামল : আমি আর এমন কি করেছি ,
           বড়ো জোর ওদের দু’টো  খেতে দিয়েছি
           ওদের পেট কিছুটা তো ভরলো ,
           তাতে আমার নাইবা কিছু জুটলো ।


নিমাই : বেশ তোর যা ইচ্ছে তুই তাই কর
           মর তুই মর ,
           আমাদেরও মার , একটকুও ভাবলিনা ,
           কেমন আছে তোর মেয়ে ময়না ?


শ্যামল : কাকা দোহাই তোমার
            যা হয় হবে আমার
            তুমি বোলোনা বাড়ির কথা ,
            পরিবেশ সমাজ আমার বন্ধু , আমার মাতা-পিতা ।


নিমাই : তুই বুঝবিনা , তোর যে কি হল
           আমি তা সত্যিই জানিনা ।
           তুই ভাবিসনা , আমিও আছি সাথে
           তুই পাবি আমাকে পাশে পাশে ।


শ্যামল : জমিদার গগন পাণ্ডা ,
            সময় এসেছে সামলে রাখো মুণ্ডুটা ।
            আজ আমি আর নই একা
            সাথে আছে নিমাই কাকা ।


নিমাই : ওরে শ্যামল , ওরে বিমল ,
           আয় ছুটে , যাবো একই সাথে
           লড়াই এর মাঠে
           পায়ে পায়ে হেঁটে ।

বিমল : "মানুষ বড়ো কাঁদছে তুমি
           মানুষ হয়ে পাশে দাঁড়াও
           মানুষই ফাঁদ পাতছে তুমি
           পাখির মতো পাশে দাঁড়াও..."


               (কবি : শক্তি চট্টোপাধ্যায় এর "দাঁড়াও" কবিতার অংশ )


শ্যামল : যায় যাবে প্রাণ
           তবুও চেষ্টা করবো আপ্রান
           শয়তানের মুখোমুখি দাঁড়াবার ,
           শক্তি করবো জোগাড় ।


নিমাই : কালো বাজারি , কালো টাকায়
           আর কতদিন ? হয়েছে সময় ,
           হিসেবটা বুঝে নেবার ।
           সময় হয়েছে মানুষের পাশে দাঁড়াবার ।।