আজ প্রচন্ড ঘাটতি পড়েছে গভীর ভালবাসার,
ভাঙন ধরেছে মনের ভেতর মায়া-মমতার।
আজ প্রশস্ত পথের উপর চলন্ত আপন পথচারীও,
ক্লান্ত হয়ে এক ফোটা পানি পায় না নিজ ঘরেও।
প্রতারণা,লোভ,হিংসা আর আকাশ ছোঁয়া অহমিকা,
জীবনের সুদীর্ঘ পথকে করেছে নিদারুণ বাঁকা।
আজ মৃত জীবনে প্রাণের অর্থ নিহিত নয় পানিতে,
মানুষ আজ স্বার্থের তৃষ্ণা মেটায় মানুষেরই রক্তে।
বিবেকের কঠিন তাড়ণা আজ হয়ে গেছে বিমুক্ত,
মানব মনের হিংস্র পাশবিকতাই সেখানে যুক্ত।
জিঘাংসার গন্ধে ভারী হয়ে উঠেছে প্রতিটি নিঃশ্বাস,
সাইকাসের বদলে পথের ধারে তাই শোভা পায় লাশ।
শত শত অতীতকে দেখি অবিরাম গতিতে চলমান,
সেখানে হাজার হাজার ভবিষ্যত হয়ে যায় বর্তমান।
চলার পথে কৃষ্ণচূড়ার মত পড়ে থাকে স্মৃতিগুলো,
সময়ের সাথে পিছিয়ে পড়ে ছিটিয়ে দেয় শুধু ধূলো।
বৈষম্যের আঘাতে জর্জরিত অসহায় মানবতা,
অসহ্য ব্যথার কাছে হার মানে তাদের নিরবতা।
পরশ্রীকাতরতা ধ্বংস করেছে দুর্বল মানব-হৃদয়,
যেখানে রোষানলে পুড়ে অপরূপ প্রসূনেরও নিলয়।
তাই আজ মানুষের সারিতে দেখা যায় অমানুষ,
স্বার্থের কষাঘাতে বিবেক হয়ে গেছে যেন বেহুশ।
হিংসুক সমাজে সৌহার্দ্য প্রেম-প্রীতির বড় অভাব,
চেতনার অন্তরালে বদলে গেছে মনুষ্য স্বভাব।
নিঃস্ব হয়ে বাড়ানো হাত ফিরিয়ে দেয় ঘৃণা ভরে,
আর বিত্তের তারল্য পূর্ণ করে খুব যতন করে।
শত কথার ভীড়ে হারিয়ে যায় উচিত কর্মসম্ভার,
দিন দিন তাই উথলে উঠে গম্ভীর মনের হাহাকার।
সাবধানতার নামে গোপন সন্দেহে মেতে উঠে,
কালসমুদ্রে তখন একমুঠো উৎসাহই শুধু জোটে।
বাসন্তী কোকিল গানে মেতে ভেতরটা করে আড়াল,
তাদের সাথে থেকেও এই মন মেলাতে পারে না তাল।
তবুও হন্যে হয়ে বহু প্রতিক্ষিত ভালবাসা খুঁজে ফিরি,
জানি একদিন আসবে এই তটে শাশ্বত অনন্তলোকের সিঁড়ি।