তখন আমি পঞ্চম শ্রেনী
হাই ইস্কুলে পড়ি,
ছাতা মাথায় মাঠ পেরিয়ে
ফিরতেছিলাম বাড়ি ।
হঠাৎ দেখি অচেনা এক
ক্লান্ত পথিক এসে-
একটু খানি জলের আশায়
ডাকল ভালোবেসে ।
ছুট্টে গিয়ে জলের বোতল
দিলাম সাথে সাথে,
বোতলখানি ধরল মুখে
কম্পিত দুই হাতে ।
জল যে খেল, শান্তি দিল
স্নিগ্ধ পলাশ ছায়া,
যাচ্ছি তবু টানছে যেন
অচেনা এক মায়া !
হাঁটছি পথে, দুরেতে গ্রাম
চাইছি আমি পিছে,
হঠাৎ দেখি নিথর পথিক
পড়ল আলের নীচে !
ছুট্টে গেলাম, আমার কোলে
রাখি যে তার মাথা,
চিৎকার করি-এসো বাঁচাও
আছো কী কেও কোথা ?
দশবারো জন টলতে টলতে
মারতে এল যেন-
এই বেটা তুই এত্ত জোরে
চিৎকার করিস কেন ?
জানি আমি মাতাল তারা
কাঁপছিল বুক ভয়ে,
রাগের সুরে বলল তারা-
কে রে আছে শুয়ে ?
বললাম আমি-জানি না কো
যাও না তারে নিয়ে,
স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করো
তাড়াতাড়ি গিয়ে ।
খেলছিল যে জুয়া তারা
পলাশ বনের ধারে,
আমার করুণ কান্না দেখে
নিয়ে গেল তারে ।
ফিরছে পাখি বিকেল বেলা
ফিরছি আমি বাড়ি,
প্রতিক্ষিত মায়ের চোখে
স্নেহের অশ্রু বারি ।
ধমক ধামক দিল যে মা
টেনে স্নেহের কোলে,
চোখের জলে মুখটি লুকোই
মায়ের আঁচল তলে ।
তারপরে আর সেই পথিকের
কোনো খবর নাই,
দেখতে দেখতে আটটি বছর
পেরিয়ে গেল হায় !
রচনা : ১৫/০৭/২০১৩