একদিকে ,
আমি নিজেকে ধর্ষক  ভাবতে ভালোবাসি
আমি পাশবিক পুরুষতন্ত্রের ধ্বজাধারী ।
আমি আল্লার নামে নামাজ পড়ি  ।
দিনে রাতে ভগবানের  নামে মন্ত্র পড়ি ।
তবু এক খন্ড মাংস পিন্ড পেলে সব ভুলে যাই ,
মেতে উঠি সাপের খেলায় ।  
তখন একদিকে রাম অন্যদিকে রহিম,
সবাই চুপ থাকে । আমার খেলা দেখে ।
আমার নিঃস্বাসে বিষ আছেl
বিষের ফল্গুধারা বয়ে চলেছে আমার শরীরে ।
যে  নারী আমাকে ধারন করেছিল,
সেই নারী দেহে খুঁজে নিই সম্ভোগ সুখ।


অন্যদিকে ,
আমি নিজেকে অসহায় ভাবতে ভালোবাসি ।
তাই ,আমি আজও শান্তিতে ঘুমিয়ে আছি।
চোখ কান বন্ধ রেখেছি ।
খিল দিয়েছি সমস্ত দরজায়।
আমি  শুনতে চাইনি সেই ধর্ষিতার সুতীব্র চিৎকার ।
আমার কানে আসেনি আট বছরের সেই শিশুর হাহাকার ।
শুধু আয়নার দিকে তাকালে দেখতে  পাই ,
ওরা এখনো কেঁদে চলেছে ,
আসিফা , নির্ভয়া বা কামদুনির সেই কিশোরী ।
এখনো তারস্বরে চিৎকার করে বলে ,
"আমরা স্বর্গ চাইনা । চাইনা কোনো জান্নাত । পৃথিবীতে ফিরে আসতে চাই। আমরা বাঁচতে চাই।"
কিন্ত এখনো আমি নিজেকে নিয়ে বাঁচি ।
তাই এসব থেকে নিজেকে সরিয়ে রেখেছি।
আমি এভাবেই ঘুমিয়ে ছিলাম ।


কিন্ত আমি স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি ,
একদিন স্বপ্ন আসে চোখে ।
দেখি , আমার চারিদিকে  নির্ভয়া, আর ছোটো আসিফা, আরো অনেকেই ।
ওরা আজও জবাব চায়।
যোনি টুকুই কি ওঁদের পরিচয় ?
ওঁদের কান্নায় ডুবে  গেছে ঘরের উঠোন ।
বুক ফেটে যাচ্ছে আমার ।
মনে হয় যেন নিমেষে  নিজেকে পাল্টে ফেলেছি ।
ভেঙ্গে ফেলেছি  সব তন্ত্র মন্ত্রের ঝান্ডা।
আমি আর ধর্ষণ চাইনা ।
আমি আর মাংস পিন্ড নিয়ে খেলতে চাইনা ।
নিজেকে প্রশ্ন করি -
আসিফা, নির্ভয়া ওঁদের মতো আরো যাঁরা  অনেকেই ফুল হয়ে ফুটতে চেয়েছিল,
কেউ উড়তে চেয়েছিল পাখি হয়ে
এই আকাশের নীচে,
ওঁদের কি দিতে পারিনা -বাঁচার অধিকার?
কারন ওঁরা রামকে চায়নি,
ওঁরা আল্লাকে চায়নি,
ওঁরা তারা হতে চায়নি ,
ওঁরা শুধু বাঁচতে চেয়েছিল।