নিজে বি.এ  পাশ   তবুও  মিলেনি  চাকরি, ছোট   দোকান  চলত  বাবার
নিজেরা  বাঁচত   আধপেটা  খেয়ে ,  তাও  রোজ  আমার  থাকত  খাবার |
ভাঙ্গা  সাইকেল এ  চাপিয়ে  আমাকে  পৌছে  দিত  যে স্কুলে  
ছেলে  আমার  হবে  যে  মানুষ   দাঁড়াবে  যে  মাথা  তুলে |
এভাবেই  চলল  আঠার বছর  শেষে    হাসি  ফুটল  বাবার  মুখে
ছেলে  হবে  আমার  ইঞ্জিনিয়ার  দিন  কাটবে  চরম  সুখে |
অনেক  স্বপ্ন  বুকে  বেধে  আমি  ছেড়ে  এলাম  নিজের  বাড়ি
বুঝিনি  তখন,  নিরবে  কখন  হয়ে গেল  ছাড়াছাড়ি |  
প্রথম  প্রথম  টিকতনা  মন  শুধু  বাড়ি  যেতে  মন  টানে
সময়ের  সাথে  মুছে  যেতে  থাকে  সব  সম্পর্কের  মানে |
বাড়ি  যাওয়া   পুরো  হলো  যে  বন্ধ  কলেজ  শেষের  দিকে
বাবা -মার রং সময়ের সাথে হয়ে গেছে শুধু ফিকে |
বাবা- মা    ভাবছে  ছেলে  পড়ছে  অনেক  তাই  দারুন  চাকরি  পাবে
ছেলে  বলে  গেছে  চাকরি যেখানেই  হোক   আমাদের  নিয়ে  যাবে |
বাবা- মাকে  ছেড়ে  কখনো  একলা  হইনি  ছিল  গার্ল ফ্রেন্ড আমার   সাথে
তাঁর   প্রেমে  জীবনে  লেগেছিল  নেশা  তাই  সময়  ছিলনা  হাতে |
অবশেষে  নিয়ে  একটা  চাকরি , বাবার  সামনে  দাঁড়ালাম  এসে
বললাম   মাইনে  তেমন  বেশি  কিছু  নয়   আবার  যেতে  হবে  দূর  দেশে |
তোমরা  এখন  এখানেই  থাকো  আমি  টাকা  পাঠাব  যে  প্রতি  মাসে
সবকিছুতেই  সম্মতি  আছে  তাও  বাবার  চোখে  কেন  জল  আসে |
সে   জলের  মানে  বুঝিনি    তখন    আর  ভেবেও  দেখিনি  অত
নিজের  জীবন  গুছিয়ে  নিয়েছি   আজকে  নিজের  মনের  মত
আমি থাকি এক বড় ফ্ল্যাট -এ  তাই ফিরিনি কোনদিন ও  ভুল  করে
এই ফ্ল্যাট এ আর হলনা যে  আসা তাঁরা রইলো যে ভাঙ্গা ঘরে |
এভাবে চলছে বছর দশেক করেছি চাকরি তে ভালো নাম
বাবা- মা আজ হযেছে পুরনো কমেছে   তাঁদের দাম|
এখানে  আমার  ভরা সংসার  স্ত্রী  পুত্র  কে  নিয়ে ,
তোমরা আমায় এ কি বানালে তোমাদের  সব কষ্টের  দাম  দিয়ে |
এখানে আমার খরচা অনেক কি করে পাঠাব টাকা?
তাদের জীবন হযেছে শূন্য  ,আজ সেই ঘর যে হযেছে ফাঁকা|
তাঁদের ছেলে যে মাথা তুলেছে তবু  বাবা-মার মাথা আজ  গিয়েছে নেমে
সব আশা আজ হারিয়েছে ভাষা এই  জীবন গিয়েছে থেমে |


আমার জীবন বাঁধা পড়ে গেছে  যান্ত্রিকতার ঘরে
অমানুষ  হয়ে   বেঁচে  আছি আমি  তাঁদের  ছেলে  যে  গিয়েছে  মরে |