যতবার এ হাতে ময়লা লেগেছে,ধুয়েছি।
খালি পানিতে ধুয়েও ময়লা পরিস্কার হয়েছে,
কিন্তু এবার??
এবার যে  লেগেছে-
চটের ব্যাগ হাতে গ্রাম্য হাটুরের রক্ত,
রাস্তায় পড়ে থাকা লুলা ভিখারি সাত্তারের রক্ত।
লেগেছে সারাদিন ঘামে ভেজা ভ্যানওয়ালা মন্টুর রক্ত,
রোদে পোড়া কৃষ্ণকায় বর্গাচাষী রবিউল মিয়ার রক্ত।
এ রক্ত সরাবো কিভাবে??
সাবান দিয়ে,হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে, ডেটল বা স্যাভলনের মত এন্টিসেপ্টিক দিয়ে কতবার ঘসেছি, যায়নি।
কাপড় কাচা ডিটারজেন্ট এর মধ্যে হাত ভিজিয়ে রেখেছি বহুবার,
তবুও যায়নি।
না রক্তের দাগ,না  গন্ধ, কোনটাই।
কি করেই বা যাবে -
এ রক্তের দাগ যে মিশে গেছে আমার রক্তে,
জিহ্বায়,প্রতিটি শিরা-উপশিরা,ধমনীতে।
কতভাবে চুষে খেয়েছি রক্ত ওদের....
হাটুরের ব্যাগে লালশাক আর কলমিলতা ছিলো,
একটা লাল পেড়ে শাড়িও কিনেছিল
মেয়ে তিথলীর জন্য।
আমি ওর নিওরোনে দুশ্চিন্তার বিষ ঢেলেছিলাম।
তারপর চুষে খেয়েছি ওর তাজা লাল রক্ত পিষাচের মত।।
লুলা ভিখারি ছাত্তারের ইনকাম ইদানীং বেড়ে গেছে বহুগুন..
রাস্তা দিয়ে যেই যায়, দিয়ে যেত দু পয়সা।
মোট দুইশ দশ টাকা ছিলো ওর ভাঙা থালাতে।
ভিখারির বাচ্চা! এত টাকা কামাইস চাদা দিবি না??
তাইতো, ওর ভাঙা প্লেট ভর্তি করে ওর রক্ত গিলেছি ছোট্ট ফুটা দিয়ে।
কেউ দেখেনি।
কেউ দেখেনি,ভ্যানওয়ালা মন্টুর গায়ের ঘাম কিভাবে রক্ত হয়েছিল!
রবিউল মিয়ার ধানী জমি কিভাবে
আমার পিপাসার মিটিয়েছিল।
কেউ দেখেনি।।
কিন্তু শালার সব গুলার রক্তে বিশ্রী গন্ধ,
এখনো যায়নি কিছুতেই।
না সাবান, না ডিটারজেন্টে।
মনে হচ্ছে,প্যারিসের সব পারফিউম গিলে খাই,
প্লাস্টিক সার্জারি করে বদলে ফেলি হাতের চামড়া।
এখনো যে অনেক রক্ত খাওয়া বাকি।।।


প্রথম প্রকাশকালঃ
০৫ জুন ২০১৬ ইং