প্রস্থান


খুর সুন্দর একটি দিনে তোমার ঘরে প্রবেশ করেছিলাম।
অনেকটা ভয়ে অপেক্ষা করছিলাম তোমার জন্যে,
সম্পূর্ণ নতুন একটা পরিবেশ আমার জন্যে।
অবশেষে তুমি এলে, হাতটা বাড়িয়ে দিলে আমার দিকে। কি অদ্ভূত! আকর্ষণে পরম নির্ভরতায় তোমার হাতটা ধরলাম। জানো? নিমিষে আমার ভয়টা কেটে গেল!


রাতটা গল্প করেই কেটে গেল দুজনের। কত সুন্দর আর গুছানো ছিলো তোমার কথাগুলো। অপলক তাকিয়ে মুগ্ধ হয়ে শুনছিলাম। হয়তো এটাকেই ভালো লাগা বলে।


জানো! আজও কথাগুলো আমার কানে বাজে।
তোমার প্রতিটি স্বপ্নবুননের কথা খুব মনে আছে।
সেদিন আমি মনে মনে হেসেছিলাম কারন, এমনটা সবাই হয়তো বলে কিন্তু তা আর করা হয়না। কিন্তু
তুমি আমাকে অবাক করে দিলে! খুব যত্ন করে তুমি
প্রতিটি কথা রাখছিলে। তোমার স্বপ্নঘর ছিলো আমার স্বর্গ। একটু এলোমেলো তে উতলা হয়ে পড়তাম। হয়তো এটাই ভালোবাসা!


অতঃপর, আমাদের ঘর আলো করে এলো প্রথম সন্তান। আস্তে আস্তে তোমার ব্যস্ততা বেড়েই চলে।
দিন শেষে অপেক্ষা করতাম তোমার জন্যে। অপেক্ষা করতে করতে একসময় মেনে নিতে শিখলাম। তোমার আর সময় হয়না আমার খোঁজ নেওয়ার। আবারও কোল জুড়ে এলো আমাদের
দ্বিতীয় সন্তান। এবার তুমি আরও দূরে সরে গেলে।
আমিও  এটাই নিয়ম ভেবে পুরো মনোযোগ দিলাম
ঘর সংসার কাজে। সবার যত্ন নেয়া খুশি করাই যেনো আমার কাজ।


তোমার দেয়া প্রতিটি প্রতিশ্রুতি আমি ভুলিনি। তোমার একটু একটু করে অবহেলা, অবজ্ঞা আমাদের দৃরত্বটা এতোটাই বাড়িয়ে দেয়, সেটা আর কখনো পূরণ হবার নয়।কোনো বিশেষ দিন কোনো বিশেষ মুহূর্ত এখন আর তোমার মনে পড়ে না। হয়তো মনে পড়লে ও সময় দেয়ার প্রয়োজন মনে করো না। ভাবো আছেই তো মানুষটা সংসারে।


জানো এখন আমার আর কোনো প্রত্যাশা নেই। এখন তোমার  অবজ্ঞাগুলো গায়ে কাঁটা বিঁধে। আমি বড্ডো ক্লান্ত আজ।তাই আমি ঠিক করেছি
তোমার মনের মাঝে জায়গা করে নেয়ার ব্যর্থ চেষ্টা আর আমি করবো না। আর তাই তোমার মন থেকে আজ আমি প্রস্থান করলাম।