পলাতক হইয়াছি জীবনের থেকে, স্বপ্নের মৃদু আস্ফালন দেখিয়াছি


বহুবার, তবুও নিষ্কৃতি চাই উজ্জ্বলতা থেকে; যেই সুখ ভুলিয়ে দেয়


জীবনের সব ধূসরতা - তাহাকে চাই না আমি, যেই বিহঙ্গের গান


প্রভাতে সায়াহ্নে আছড়ে পড়ে দুয়ারে - তাহার প্রবাহে ভাসতে চাই না;


অপরূপ সৌন্দর্যের বিবশে মগ্ন হতে চাই না, অন্তরের গহীনে কি


শীতলতা আছে! সুখের ছলনা আমি চাই না, দুঃখের সততা খুঁজি -


অমা নিশির তিমির হনন করে যেই নিশাচর - তাহার চোখের মতো


দেখিতে চাই তোমাকে; শুষ্কতা নেই যেথা খড়নাড়া মাঠের মতো;


কত বৈকালিক গান শুনিয়াছি একাকী, মনের উচ্ছলতা প্রকাশ


করেছে যারা অনায়াসে - তাদের বেদনা যত, মাঠের গল্প যত -


ভুলিয়া যাই নি আমি সেই শিশুদের মুখ, মাটির উনোনে যাহাদের


গরম ফুটন্ত ভাত - যেই কৃতদার সাঁওতাল রমণীর মতো, তাহাদের


প্রবল ভালোবাসা, তাহাদের মিঠে রাগ মিশে যায় ঘাসেদের সাথে,


রাত্রির বাতাসের সাথে, পরিশ্রমী মানবের অধরের সাথে;


সেই সুর যাহারা কামনা করে তাহাদের সাথে কেন মিশে যাব না,


তাহাদের মনের মাধুরী যত, যত কথা হয়ে যায় চোখের আড়ালে,


সেই সব স্মৃতি যত আসে হৃদয়ের তটে; এই শীত আর শীতলতা


যাহারা পড়িছে ঐ শিশিরের বেশে কোনো দীঘির উপরে,


বৃক্ষ শাখে পরিবৃত সেই সব হৃদয়ের জলাভূমি, আলেয়ার আলো


সেথা করে খেলা, প্রেম করে সারারাত রাতচড়া বিহঙ্গের সুর,


শৃগালের আহ্লাদে কাহাদের ভয় জাগে প্রাণে, কোন একা মানব


খোঁজে সেই নিশীথিনীর সুর, কোন ভরা যুবতীর বেশে ধরা দেবে


প্রকৃতি তাকে, কাহাকে খুঁজিছে সে মরা জোছনাতে;


অতীতের কোন রাগ আসবে ভেসে, কোন সরোদের দুখ


অতি তীব্র ভাবে আঘাত হানবে তার হৃদে, কোন প্রাণহারা কপোতীর শোক


এসে বিঁধিবে তাহারে; দূর কোনো স্মৃতিপটে এক বালকের


একাকী জীবন তাহাকে কষ্ট দেবে,


স্কুল ফেরা সেই বালকের কত বর্ষা কত শীতের দীর্ঘ রাত কেটেছে


আঁখির সাথে সঙ্গোপনে;  তবুও চাই না কোনো হলুদ জোছনা ভরা রাত,


মৃদু বাতাসের ছোঁয়া আজিকার মতো; তাও হায় অছিলায় আসে কোন নদী,


বয়ে যায় অশ্রু যত হৃদ সমাধির, বেদনার নীল কুয়াশায় বৃষ্টি নামে, কোন এক


মদিরার নেশা, কোন এক রমণীর কবোষ্ণ বুক, তাহার চোখের শীত,


তাহার বুকের শীত ঘীরে আসে বিছানার কিনারে, এক মাঠ জোছনা ঢুকে পড়ে ঘরে,


দুরন্ত বাতাস আসে, আর আসে রজনীর সুবাস মাখা অকল্কা, সেই সুখ ফিরাব


কেমনে! আবার বাঁধা পড়ে, কোনো এক রাহুলের তরে, আমার বিছানার পাশে


সুগন্ধী ঘাসের, বনফুলের জন্ম হয় - ঘর দেখি ঘর নেই, চারিদিকে


বিস্তীর্ণ প্রান্তর - আর স্বর্গীয় জ্যোৎস্নাসম্পাতে ভরে গেছে


খড়পোড়া পৌষের মাঠ, আর সুবাসিত ঘাস ছিঁড়ে নেয়


এক কস্তুরী-মৃগ, তাহার থেকে বাঁচাবো কেমনে


আপনার হৃদ।


বিশ্বজিৎ লাই