আজকাল আমরা সমাজের বেড়াজালে নিষ্পেষিত হয়ে আছি ,
সত্য মিথ্যা জানিনা কিন্তু আমার মতে তো তাই।
সমাজ আপনাকে প্রতিষ্ঠিত হতে বাধা দিবে,
কিন্তু আপনি প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেলে তার ক্রেডিটটা ঠিকই নিয়ে নিবে।
আপনি গরীব ঘরে জন্মিয়েছেন,
সমাজ আপনাকে বলবে,
আরে এত গরীবের ছেলে এর দ্বারা কি আর হবে,
দিনশেষে আপনি যখন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হবেন,
তখন সমাজ বলবে এই ছেলেটার উপর ভরসা ছিলো একদিন বড় হবে।
সমাজের সবচেয়ে সুন্দর কাজ হলো কাউকে হতাশ করা।
এই যেমন ধরুন
এক ছাত্র আত্মহত্যার আগে তার কিছু কথা সাজিয়ে লিখে গিয়েছিলো
আপনাদের সবার জন্য,
আমাদের সমাজের জন্য।
পরীক্ষায় ফেল করাটা তার বাবা মা মেনে নিলেও,
মেনে নেয়নি সমাজ নামক ঘৃণ্য সিস্টেম,
তাই তো নিজের জীবন দিয়ে সমাজের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে গেল।

আপনি এসএসসিতে প্লাস পেয়েছেন,
সমাজ আপনাকে বলবে এইচএসসিতে পেয়ে দেখাও,
এসএসসির প্লাসের আবার দাম আছে নাকি।

আপনি এইচএসসিতে প্লাস পেলে সমাজ বলবে ভার্সিটিতে চান্স পেয়ে দেখাও,
এইচএসসিতে গোল্ডেন পাওয়া কত স্টুডেন্ট ভার্সিটিতে চান্স পাইনা।


অতঃপরও আপনি ঢাবিতে চান্স পেলে সমাজ বলবে,
ঢাবিতে চান্স পেয়েছো এ আর এমন কি কথা,
মেডিকেলে তো চান্স পাও নি।
মেডিকেলে পড়লে তো ডাক্তার হতে পারতে।
এখন তো একটা সাবজেক্ট নিয়ে পড়ে সেই চাকরির পিছনে ছুটতে হবে।


আপনি মেডিকেলে পড়লে সমাজ বলবে তুমি তো বুয়েটে চান্সই পেলে না,
বুয়েটে পড়লে নিশ্চিত বড় পদে চাকরি পেতে, লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করতে পারতে।
অথচ আপনি বুয়েটে পড়লে সমাজ আপনাকে  বলতো
মেডিকেলে পড়তে পারলে
বড় ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করতে পারতে।


আপনি ২০ হাজার টাকার চাকরি করেন
সমাজ আপনাকে বলবে তোরই তো এক বন্ধু মাসে ৫০ হাজার টাকা স্যালারি পায়,
অথচ আপনি ৫০ হাজার টাকা স্যালারি পেলে
সমাজ আপনাকে বলতো পাশের বাড়ির ছেলেটা বিদেশে গিয়ে ১ লক্ষ টাকা ইনকাম করে।


এটাই আমাদের সমাজ,
আপনার সমালোচনা ছাড়া কিছুই করতে পারে না সে,
আপনাকে পিছন থেকে টানা ছাড়া যার কোন ক্ষমতা নেই।
জীবনে সফল হতে চাইলে আপনার দুই কান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেন।
দেখবেন অনেক বড় হয়ে গেছেন।  


কেউ যদি আমাকে জিগ্যেস করে,
তুমি কি তোমার প্রাক্তনকে সবচেয়ে বেশি ঘৃণা করো?
তখন মুচকি হেসে বলি,
আমি আমার সমাজকে সবচেয়ে বেশি ঘৃণা করি।


কবিতা : সমাজকে ঘৃণা করি
কলমে : মো পারভেজ হুসেন