ডালিম বেদানা ফল বেশ সুমিষ্ট
বেশ খেতে এদের রসে ভরা দানাগুলি ।
তবে এসব ফল খেতে গেলে অনেক সময় ও বেশ
হ্যাপা নিতে হয় । টেবিলের ওপর রেখে এক হাতে ধরে
অন্য হাতে ছুরি চালিয়ে খোসা ছাড়াতে হয় । খোসা ছাড়ালে
দেখা যায় পাতলা সাদা আস্তরণের নীচে লাল রসে
ভরপুর দানাগুলো বেশ সুসজ্জিত ।
পর্ণমোচী গাছেদের মতো পাতলা আস্তরণগুলো তুলে
দানাগুলো খেতে হয় খুব ধীরে ধীরে
খেয়াল না রাখলেই রস ছিটকে পরতে পারে বাহারি পোশাকে ।


শহুরে বাবুরা এসব ফল খেতে খুব ভালবাসে
খাবারের পরে উপরি পুষ্টি পেতে
কেননা আজকের দিনে অনেক বাবুই অপুষ্টিতে ভোগে ।
এসব ফল আসে শহর থেকে অনেক দূরের গ্রামের চাষিদের বাগান থেকে
মূলত পাইকারেরাই নিয়ে আসে 'ন্যায্য দামে' ।
এসব ফল বেশি পেকে গেলে ফেটে যায়
(তাতে কিছু কীট পতঙ্গ বসে কিছু রস খেয়ে নেয়
না খেলেও শুচিবায়ুগ্রস্থ মানুষের মনে হওয়া স্বাভাবিক)
বাবুরা ওরকম ফল কিনতে চায়না।
তাই ফলগুলো ঠিক পাকবার আগে
শুধু চেহেরা ও খোসার রং দেখে পাইকারেরা তুলে নিয়ে আসে।
নিয়ে আসে ঝুড়ি ভর্তি করে
ঝুড়ির মুখগুলো শক্ত দড়িতে বাঁধা থাকে
যেন কোন ফল রাস্তাঘাটে পড়ে না যেতে পারে।


এরপর এসব ফল শহরে এলে
কেমিক্যাল দিয়ে 'পরিপক্ক' করে
শহরের অলিতে গলিতে ফলের দোকানে
পাঠানো হয়; বাবুরা ওসব দোকান চেনে
বাবুরা নিজের মতো দরদাম করে কিনে নিয়ে যায়
আরাম করে খোসা ছাড়িয়ে খায়
খাওয়া শেষ হলে শুধু খোসাগুলো মেঝেতে ছড়িয়ে থাকে
                                  বাবুরা ঘুমায়।


ভগবান দেবতারাও ফল খায় বুঝি
খাওয়ার প্রমাণ দেয় কিছু পৌরাণিক পুঁথি।
তাই মানুষ ডালিম বেদানার খোসা ছাড়িয়ে
দু চারটা দানা দেয় ঠাকুরের পাতে
মাঝে মাঝে শহরের পুজোয় গেলে
প্রসাদে তার নমুনা মেলে।


আচ্ছা ডালিম বেদানা গাছেদের কি ব্যথা পায়?
পায়না বুঝি। পেলে কি আর ফি বছর ফসল ফলায়?
আর পেয়েও থাকে যদি তবে তা বাকলে পাতায় জমায়
শীতকালে সেসব বাকল পাতা ফেলে আবার সাজে
                              নতুন পাতা আসার আশায়।