ময়দানে কিছু অচেনা মুখ
বিষন্ন চরিত্রের কিছু প্রাসঙ্গিক
গল্প!
একাত্তরের বিপ্লবী আন্দোলনের
সেই ছেলেটা, আজ বৃদ্ধ অমরেশ বাবু
জগতের পরিবর্তন দেখেও
নিজেকে কোনোদিন পরিবর্তন করেনি
হিসেব করে জীবন চলে না
ছা পোষা মানুষের পেটটাই আগে
তবু যদি কিছু উপকার হয়
অন্যের, তবে গিভ এন্ড টেক পলিসি.....


তিতির, বিয়ের পরদিনই বাড়ীর
পিছনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে এসেছে
জোড় করে চাপিয়ে দেওয়া সম্পর্ক
থেকে মুক্তির খোঁজে;
বড্ড ছেলেমানুষ
এখনো রাতে ভূতের ভয়ে কাঁপে
ভরসা এখন অমরেশ বাবু


কৌশিক ; ক্যালকাটা বয়েজ এর
অঙ্কের টিচার, ক্যালকুলাস ছাড়া
কিছুই মাথায় ঢোকে না,
তবু তিতিরের এক্স বয়ফ্রেন্ডের
অভিনয়ে রাজি না হয়ে পারিনি
অমরেশ দা বলেছিলেন
ছেলে মানুষ; একটু বুঝিয়ে সুজিয়ে যদি
সঠিক পথে!
কিন্তু না শেষ রক্ষা হয়নি
কৌশিকের দ্বারা একটা বাচাল মেয়েকে
অসম্ভব!


রাতের কোলকাতায়
আজকাল আবার খুব খুন হচ্ছে
কালই এক ট্যাক্সি ডাইভার!
মাথাটা কেউ ভারী পাথরে
থেথলে দিয়েছে
একজোড়া মেয়েদের হিল
পাওয়া গেছে!


ময়দানের বেঞ্চ জুড়ে
শুয়ে আছে নিশিথ
বছর কুড়ি বয়স
সামনের একটা অফিসের
দরজায় বসে থাকা টাইপিষ্ট!
"ও ভাই, এটা তো ঘুমের নয়
বসার জায়গা'
নিশিতের ঘুমের আর যো নেই
কালকের মার্ডারের জন্য
পুলিশের হম্বিতম্বি
গরীবের পেটে লাথি
মারলেই হয়...


এই নিয়ে চারবার
মোনালিসা চোখেমুখে জল দিয়েছে
সেদিনের রাতটা আজ ওকে
বানিয়েছে খুনী!
বেশ তো ছিলো ওরা
তিনজনের সুখী পরিবার
পেছন থেকে গুলিটা
এসে লেগেছিলো অরিন্দমের
খুব কাছ থেকে দেখেছিলো
মুখ গুলো!
সেই থেকে প্রতিশোধ
না না, পুলিশের চোখে
সে ধরা দেয়নি


পেট্রোল পাম্পে মনিষাকে
রোজ ওরা মাপে
চোখ দিয়ে, সয়ে গেছে
রাতের কোলকাতার
এটা আর নতুন কি
তবু কাজটা বেশ
একদিন নিশ্চয় ভালো থাকবে সে...


সবই বদলায় সময়ের সাথে
আজ তিতির মা হচ্ছে
নিশিথের একটা কম্পিউটারের দোকান
হয়েছে...
কৌশিক এখন মোনালিসার ছেলের
অঙ্কের টিচার
শুধু দুটো চোখ আজ
খুঁজছে ভালো রাখার গল্প
ময়দানের গাছের নীচে
আবারও অচেনা মুখের সন্ধান
রূপকথা!!!!!!