কবিদের বুলবুলির লড়াই


নেরুদা বললেন,
জানো মিগেল আমার বড় দুঃখ।
মিগেল রাস্তায় চলতে চলতে
নেরুদার কাঁধে হাত রাখলেন,
অপেক্ষা করলেন।
কবিদের তো কতরকমের দুঃখ !
দীর্ঘশ্বাস ফেলে নেরুদা বললেন,
অমি কোনোদিন বুলবুলির ডাক শুনিনি
আমার দেশের ঠান্ডা ওদের সহ্য হয় না।
মিগেল থেমে গেলেন
রাস্তার ধারে সুউচ্চ গাছটি থেকে
অপরাহ্নের দীর্ঘ ছায়ায় চারদিক মায়াময়
মিগেলের মুখে রহস্যের হাসি
এ সেই হাসি যা শুধু কবিরাই পারে হাসতে
কবির হাসি কবিই চেনে
নেরুদা বুঝতে পারলেন
মিগেল এর্নান্দেজ, স্পেনের এই জাতভাইটি
কিছু একটা ঘটাতে চলেছে।
মিগেল ছুটলেন গাছটির দিকে
কাঠবিড়ালির ক্ষিপ্রতায় উঠে গেলেন মগডালে
নেরুদা দেখলেন পাতার আড়ালে
অদৃশ্য হয়ে গেছে মিগেল
আর সেখান থেকে ভেসে আসছে
একটা পাখির ডাক
আশ্চর্য মিষ্টি তার স্বর
পাবলোর ঠোঁটের কোণে খেলে গেলো
এক চিলতে হাসি
একজন আপাদমস্তক কবির হাসি।
মিগেল দ্রুত গাছ থেকে নেমে এসেই ছুটলেন
একটু দূরের আর একটা বড় গাছের দিকে
মুহূর্তে আবার মগডালে পাতার আড়ালে
হারিয়ে গেলেন মিগেল
আর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লো
বুলবুলির মিষ্টি কণ্ঠস্বর।
পাবলো বিস্ফারিত চোখে দেখলেন
তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে আছেন বরিস---
বরিস পাস্তেরনাক
হাসতে হাসতে বলছেন,
কবিতা, সে তো বুলবুলির লড়াই
আর মিগেল তোমায় সেই লড়াইটাই দেখালো।
বিস্মিত পাবলো পিছন ফিরে দেখলেন
ওয়ার্ডসওয়ার্থ হাসছেন আর বলছেন,
মিগেল তো এখন বুলবুলি,
তুমি জানো না কবি মাত্রই বুলবুলি?
সে শুধু লুকিয়ে লুকিয়ে মিষ্টি সুরে
নিজের একাকিত্বের কথা বলে।
পাবলো শুনতে থাকেন
বুলবুলির ডাক আর তাঁকে
একে একে ঘিরে ধরতে থাকেন
কীট্স, শেলী, নজরুল, গালিব, রুমি...