ওরা পারে---
রাজু হাঁসদা, দিনু মুর্মু, নবা হেমব্রম,
রানি কিস্কু কিংবা ছবি টুডু...
ওরাই পারে
কারণ ওরা শেখেনি
জীবন আর মৃত্যুর মাঝে
কোনো দুর্ভেদ্য সীমারেখা টানতে ...
পরিচিত শব্দ ভান্ডার থেকে
"মৃত্যু" শব্দটাকেই
ওরা দিয়েছে বিসর্জন।
জীবন আর মৃত্যুর মাঝখানে
শুধু একটা খড়ির গন্ডিই যথেষ্ট।
তাই ওরা জানে সেসব প্রশ্নের উত্তর
আমাদের কাছ থেকে মৃত্যু
কেড়ে নিয়েছে উত্তর যাদের।
ওপার থেকে ছোট ঠাকুমা এসে
সেই গল্পটা বলে যায় ওদের
যেটা শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম আমি
শেষটা আর শোনা হয়ে ওঠেনি।
অথবা গন্ডি টপকে ওপারে গিয়ে
সহজেই মেসোমশাইকে
তোমার বৌ দেখিয়ে  আনতে পারে ওরা
বড় সাধ ছিল  মেসোর
তোমার বৌকে একবার দেখার।
একদিনের জ্বরে বাবলিদির
জোয়ান ছেলেটা কি করে মরে গেল ?
দীপান্বিতা কেন গায়ে আগুন লাগাল ?
শুভেন্দুদা পুলিশ লক আপে মরে যাবার পর
এখনো শোষণহীন মুক্ত সমাজের
স্বপ্ন দেখে কি ?
বাগেশ্রীতে কি করে সা থেকে মা লাগে ?
সেটা কেমন করে মৃত্যুর কয়েক ঘন্টা আগে
বুঝেছিলেন বড়ে গোলাম আলী ?
এই সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবে
ওদের মতো  জীবন আর মৃত্যুর মাঝে
শুধু একটা খড়ির গন্ডি টানো যদি,
তোমার শব্দ ভান্ডার থেকে
" মৃত্যু" কে বিসর্জন দাও
খড়ির ওপারে কেউ গেলে
শুধু বোলো
ও তো ওদিক পানে গেছে।


(উল্লেখ থাক - সাঁওতালিদের মধ্যে কেউ মারা গেলে সরাসরি অমুক মারা গেছে না বলে নান রূপকের ব্যবহার সুপ্রচলিত। প্রায় সব আদিবাসীরাই মনে করে মৃতরা সবাই আছে তাদেরই সঙ্গে !)