পাপ ও সাজা
( মূল রচনা—জাভেদ আখতার
রূপান্তর — নির্ঝর মুখোপাধ্যায়)


ধর্মাবতার, আমি পাপী।
আমাকে প্রাপ্য সাজা দিন।
আমি সর্বসমক্ষে  স্বীকার করছি—


আমি সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায়
একদিন বাজারে গিয়ে
নিলাম করে নিজেকে বিকিয়ে  দিয়েছি।
হ্যাঁ , তার জন্য বেশ মোটা দামও পেয়েছি।
কিন্তু আমি চোট্টামি করেছিলাম।
কয়েকটা স্বপ্ন নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলাম,
ভেবেছিলাম,কে আর আমার হৃদয় মস্তক খুলে তল্লাশ করতে যাচ্ছে?
আচ্ছা আহাম্মক ছিলাম !
স্বপ্ন কি লুকিয়ে রাখা যায় ?
মুঠোর মধ্যে কি আলোকে বন্দী করা যায় ?
অতঃপর যা হবার সেটাই হল।
এই আমি আপনার সামনে দাঁড়িয়ে  বলছি—
ধর্মাবতার আমি পাপী ,
আমাকে যথাযথ শাস্তি দিন।
আমি মাথা পেতে মেনে নেব।


আদালত সব দিক বিবেচনা করার পর—


“ অপরাধীর সমস্ত স্বপ্ন বাজেয়াপ্ত করা হল।
সমস্ত কল্পনার উড়ান
সমস্ত হৃদয়ের প্লাবন
রক্তের মধ্যে বহমান সব সঙ্গীত
অন্তরাত্মার সব সামর্থ্য
কণ্ঠ , শ্রবণেন্দ্রিয় 
সব,সব এই অপরাধীর থেকে হরণ করা হল।
এই  জঘন্য অপরাধীর কাছে
যা কিছু প্রেমের আখ্যান মজুত ছিল
যা কিছু বিরহ বেদনা
যা কিছু পল্লবিত স্মৃতি
যত অনুভব,চিন্তাশক্তি,
প্রতিটি নিজস্ব মুহূর্ত
প্রতিটি দিন রাত্রি, সকাল সন্ধ্যা
এখন থেকে এসব কিছুই বাজেয়াপ্ত করা হল।


যারা এই অপরাধীকে কিনে নিয়েছিলেন
তাদের প্রতি সুবিচারের কথা বিবেচনা করে
মহামান্য আদালত অতএব
অপরাধীকে এই মর্মে সাজা দিচ্ছে
এই অপরাধ  করার জন্য মৃত্যু নয়
তার সাজা জীবনদণ্ড !!!


(স্বনামধন্য উর্দু ভাষী কবি,চিত্রনাট্যকার,সমাজসেবী জাভেদ আখতার কোন পরিচয়ের অপেক্ষা রাখেন না। যদিও  বিখ্যাত শোলে ছবির কাহিনী-চিত্রনাট্যকার হিসেবে তাঁর পরিচয়টি সর্বজন বিদিত।)