আমরা সবাই
কেউ হেঁটে হেঁটে,কেউ দৌড়ে দৌড়ে
কেউ বা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে
কোথাও একটা পৌঁছে গেছি।
শুধু পৃথ্বীশ হাঁটা , দৌড় এসব কিছুই করল না।
তাই ও কোথায় ঠিক পৌঁছল
অথবা কোথাও আদৌ পৌঁছল কিনা
আমাদের বোধের বাইরে থেকে গেল।
আমাদের এইচ এস পরীক্ষার দুটো পেপার
পরীক্ষা দিয়ে স্রেফ “ভাল্লাগছেনা” বলে
পৃথ্বীশ শান্তিনিকেতন চলে গেল
ওর মায়ের ডুকরে কান্না আজও কানে ভাসে।
আমরা সবাই কেউ ডাক্তার ,কেউ ইনজিনিয়ার
কেউ সি এ হবার পিছনে
প্রাণপণ ছুটতে ছুটতে একবার পিছন ফিরে দেখি
পৃথ্বীশ কোথায় মিলিয়ে গেছে।
কিন্তু কোথাও পৌঁছে যাবার পরও
একটা কোথাও পৌঁছানো বাকি থাকে
আজ আমি, সমরেশ, বাদল, সুমিত ইত্যাদি সবাই
যখন সেই বাকি পৌঁছানোটার যাত্রা শুরু করছি
অবাক হয়ে দেখি পৃথ্বীশ কোথা থেকে এসে
আমাদের পাশে পাশে হাঁটছে
আমরা ক্লান্ত, শ্রান্ত, ন্যুব্জ
সবাই খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছে
শুধু পৃথ্বীশ সেই এইচ এস পরীক্ষার্থী রয়ে গেছে
আমাদের দিকে তাকিয়ে সে হাসতে হাসতে বলল,
কিরে তোরা সব এত বুড়ো হয়ে গেলি কি করে ?
আমরা বিস্ময়ে হতবাক হয়ে জিজ্ঞেস করি,
তুই কোথা থেকে এলি ? কোথায় ছিলিস এ্যদ্দিন ?
পৃথ্বীশ অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে বলল,
আজই শান্তিনিকেতন থেকে ফিরলাম রে
তারপর দৃপ্ত পদক্ষেপে এগিয়ে গেল
আমরা সবাই তখন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছি
চোখের সামনে থেকে পৃথ্বীশ
আর একবার শেষবারের মতো মিলিয়ে গেল।