বাইশ এর বাসকে বললাম,
ওরে একটু আস্তে চলনারে ভাই,
সদ্য করোনা থেকে উঠলাম,
শরীরটা বড় ক্লান্ত।
বড় নির্মম সেই বাইশ
থামা দূরে থাক
আরো জোরসে হাঁকিয়ে দিল বাস।
একে একে কত সহযাত্রী নেমে গেল
গান গাইতে গাইতে নেমে গেল
এস পি বালা, নাচতে নাচতে ঋষি কাপুর
প্রণব বাবু চুরুট খেতে খেতে বললেন
চলি আবার দেখা হবে।
ইরফান সেই অদ্ভুত চোখে হাসি নিয়ে,
সন্তুরে ঝংকার তুলে শিব কুমার
সৌমিত্র রাগী লিয়ারের সংলাপ বলতে বলতে....
বাইশ তবু কমায় না গতি
লতা দিদি একগাল হেসে
মেরি আওয়াজ হি প্যাহচান হ্যায়
গুণ গুণ করতে নেমে গেলেন
অবশেষে তেইশ নম্বর স্টপেজে এসে
ঘ্যাচাং করে যখন ব্রেক
তখন একে অন্যের ঘাড়ে হুমড়ি খেয়ে
কোনোরকমে বাস থেকে নেমে
সবাই দেখলো
মৃদু শীতের আবেশ মেখে
রাস্তায় জ্বলে উঠেছে নানান রঙের আলো
বাজারে ডালা ভর্তি শীতের সবজি
নলেন গুড়ের সৌরভ মেখে মাখাসন্দেশের হাতছানি
এইসব পুঁটলি বেঁধে
সবাই লাইন দিয়ে
যখন তেইশ নম্বরের লাইনে
তখন চোখে পড়লো
লাইনের শেষের দিকে সেই সব প্রান্তিক জন
যারা কখনই বাসে ওঠার টিকিট পায়না
যাদের বয়স বাড়ে, আর সময়
একটা আস্ত পাহাড়ের মতো
ঘাড়ের ওপর চেপে থাকে
একটা নিঃশব্দ মিছিল করে এসে দাঁড়িয়েছে তারা।
তাদেরই একজন শেষমেষ ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করে,
ও ভাই সবাই টিকিট পাবে তো ?