অনেক দিন যাবত একটা ঘুন পোকা
সুশীলাদির হাঁটুতে বাসা বেঁধেছে
সে মাতৃ গর্ভে ভ্রূণের মতো
সুশীলাকে নিঃসাড়ে দোহন করে
আর গর্ভের মতো স্ফীত হতে থাকে সুশীলার হাঁটু
সকাল বেলা সুশীলা ঘুম থেকে উঠলে
ঘ্যাঁক করে কামড়ে ধরে
অবুঝ শিশুর স্তন ছাড়াবার মতো
সুশীলা কিছুক্ষণ হাঁটুতে হাত বোলান
ঘুন পোকাটা শান্ত হলে
সুশীলা কাজে মন দেন।
কিছুদিন যাবত তার সঙ্গে
কিছু ট্যাড়া বেঁকা কথা হচ্ছে,
সে সুশীলার কাছে জানতে চায়—
আর তো চাকরি শেষ
এবার কি হবে ?
আমার কথাটা ভেবেছো একবারও ?
সুশীলা দাঁতে দাঁত চেপে
হাঁটুতে হাত বোলান
ঘুন পোকাটা কিছুতেই শান্ত হয় না
সে যেন এখুনি হাঁটু ফুঁড়ে বেরিয়ে এসে
সুশীলার মুখোমুখি হতে চায়।
আজ সুশীলাদির কর্ম জীবনের শেষ
আজ তাঁকে কিছু বলতে হবে।
কিছু বলতে উঠে দাঁড়াতেই
সুশীলা একটি হৃষ্ট পুষ্ট লতার মতো হয়ে গেলেন
চেয়ারটাকে জড়িয়ে ধরলেন
তাঁর চোখ ফেটে জল বেরিয়ে আসছে
পোকাটা ভীষণ দাপাদাপি করেছে
শ্রোতারা ভাবলো যাবার সময় এমন আবেগ স্বাভাবিক
তারা সুশীলাকে বসিয়ে দিল
সুশীলা হাঁটুতে হাত বোলাতে বোলাতে
এক যুদ্ধক্ষেত্রে অবতরণ করেন
কেউ দেখতে পায় না!