এত যত্ন করলাম
দুবেলা জল দিলাম
রোদ বাতাসে রেখে দিলাম
তবুও আমার ব্যালকনির টবের
টগর গাছটা মরে গেল কাল।
না, বরং বলা উচিত
আত্মহত্যা করল।
তার পাতাগুলো যখন
হলুদাভ হলো
ফুল ফোটা বন্ধ হোলো
তখন এক সন্ধ্যায় তাকে বলি,
তোমার কিসের দুঃখ টগর ?
কিছু তো অভাব রাখিনি তোমার ।
তবে কেন বেছে নিয়েছ
এমন আত্মহননের পথ ?
দুঃখিত  টগর বলে,
বেঁচে থাকলেই তো
তোমার চাহিদা মতো
ফোটাতে হবে ফুল।
কি হবে ফুল ফুটিয়ে ?
তুমি তো ঈশ্বরও মানোনা।
তার চরণেও ঠাঁই নেই
কষ্টে ফোটানো ফুলের আমার।
আমি ব্যগ্র হয়ে বলি,
তাতে কি, তুমি আমার জন্য ফুটবে,
আমি কি খারাপ লোক ?
আমি চেয়ে চেয়ে দেখব,
অন্ধকার আকাশে তারার মতো
তোমার শরীর ছেয়ে গেছে
ছোটো ছোটো সাদা সাদা ফুলে !
সে আরো বেশি দুঃখিত ভাবে বলে,
আর আমি?
আমি কি বাঈজী? তোমার ক্রীতদাসী?
শুধু তোমার একার জন্য
তোমার এই ছোট্ট ব্যলকনিতে রোজ
সেজে গুজে অপেক্ষায় থাকব তোমার ?
বিষ্ময়াহত আমি বলি,
তবে কি থাকতে চাও উন্মুক্ত প্রান্তরে
হাটে বাজারে বনেতে জঙ্গলে?
সকলে দেখবে তোমায়
রোজ সকালে ছিঁড়ে নিয়ে যাবে
তোমার বৃন্ত থেকে সদ্য ফোটা ফুল ?
এটাই কামনা কর তুমি ?
দুঃখিত টগর বলে,
শুধুই ওপর ওপর দেখো
ভেতরে দেখার চোখ আছে কি তোমার ?
দিয়েছো তো একরত্তি টবের মাটি।
তার বদলে চেয়ছো
এক আকাশ তারার মতো গাছ ভর্তি ফুল।
কখনো কি ভেবেছ
আমারও দরকার নিজস্ব গভীর গহন মাটি।
মানুষ বড় কম মূল্যে
বড় বেশি চায়!
সূচ্যগ্র মেদিনী দিতে নারাজ
এক দুর্যোধন তুমি
আমার মৃত্যুর দায়
নিতে হবে তোমায়।