জীবন্ত মানুষ সমুদ্রকে ভয় পায় ।
অচেনা-অসীম আকাশকে তার ভয় ।
সে ভয় পায় দিগন্তবিস্তৃত
ধু-ধু মরুভূমির সামনে দাঁড়িয়ে ।
সে ভয় পায়
যখন লকলকে শিখা বাড়িয়ে
শ্মশানের চিতা তাকে ডাকে ।
সে ভয় পায়
যখন কবর খোঁড়ার শব্দ
তার হৃদপিন্ডে শেল হানে ।


অথচ কি আশ্চর্য! এই ভীতু মানুষরাই
মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে কী দুর্ধর্ষ হয়ে ওঠে,
কোনোকিছুকেই সে আর ভয় করে না ।
সে সমুদ্রতরঙ্গশীর্ষে আশ্রয় গ্রহনকারী
তৃণখন্ডের মতো নিজেকে ভাসিয়ে দেয় ।
সে আগুনকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলে :
'বাহ, কী সুন্দর! ভাগ্যিস তুমি ছিলে!"


মাটির ভিতরে বিছানা সাজাতে গিয়ে
সে ভাবে,_ আরও একটু গভীর হলে
আমার কবরটা মন্দ হতো না ।
চারদিকে শেয়াল-কুকুরের যা উৎপাত!


সে ভয় পাওয়ার দায় হস্তান্তর করে
সমুদ্রের কাছে,
                    আকাশের কাছে,
আগুনের কাছে,
                    কবরের কাছে-;
আর তার মৃত‌্যুর পরও যারা বেঁচে থাকে
তাদের কাছে ।


(কাব্যগ্রন্থঃ চিরঅনাবৃতা হে নগ্নতমা, ২০০৫)