ব্রিফকেসে টাকা ভরে
পাজেরো-প্রাডোতে চরে
রসনা বিলাস করে
আরামের বিছানাতে
দেহ দাও ঢলে,
কি করে বুঝবে তুমি
জীবন কাকে বলে?


কাঁকডাকা ভোরে উঠে
কত লোক যায় ছুঁটে  
দু’বেলার অন্ন্য যোগায়
খেটে সারাক্ষণ,
তারাই বুঝে শুধু,
কোনটা জীবন।


বিকেল, সন্ধ্যা হলে
যাওতো শপিং মলে
উড়িয়ে লক্ষ টাকা
সুখ তুমি কিনো,
জীবনের মানে তুমি
বুঝবে কোনো দিনও?


হাতুড়ি সজোরে মেরে
যারা ভাঙ্গে শিল
একটু হেলাতে যাদের
জোটে পিঠে কিল
যারা কাঁদে বেদনাতে,
জরা-শোকে-রোগে
শয্যাশায়ী দেহ নিয়ে
দিবা-রাতি ভোগে
প্রতিটি সকাল যাদের
দুঃখ ডেকে আনে
তারাই বুঝে শুধু
জীবনের কী মানে।


তোমরা তো ক্ষমতাধারী
লাগামহীন সুখ সওয়ারী
মেতে থাকো দুনিয়াদারী
নিয়ে সারাক্ষণ,
কি করে বুঝবে তোমরা
কোনটা জীবন?

রিক্সার প্যাডেলেতে
পা মেরে দিনে রাতে
কিছু টাকা আসে হাতে
দিন শেষে মুখে পড়ে মুড়িমুড়কি,
তারাই বুঝে কেবল, জীবনটা যে কী!  


যাদের জীবন চলে
ইটভাটা, চাল কলে,
দাউদাউ আগুন জ্বলে
গায়ে এসে পড়ে ছাই লাভার মতন,
তারাই’তো বুঝবে ভালো, কোনটা জীবন।


ধানমন্ডি, গুলশানে
চলে যারা হাল-ফ্যাশনে  
বড়লোকি ইমোশনে  
পার্লারে অর্থ ঢেলে চেহারা বানায়,
তাদের মুখে কি কভু ‘জীবন’ মানায়?


বুফে দিয়ে লাঞ্চ যাদের
মদ-পার্টিতে ডিনার
যারা গড়ে কালোপথে
অর্থের মিনার
যারা থাকে এসি রুমে
লোক-প্রহরায় মহাঘুমে
সময় কাটায় নৃত্য ধুমে
সফিস্টের মতন,
কি করে বুঝবে তারা, কোনটা জীবন?


যারা খাটে মাঠে ঘাটে
যারা বহে ভার,
যাদের পেটে পড়ে না
পূর্ণ আহার,
রাস্তায় ঘুরে যারা
কিছু পয়সার লাগি,
প্রাসাদ পাহারা দেয়
সারা রাত জাগি,
যাদের শরীরে ঝরে
শ্রম বেচা ঘাম,
জীবন তাদের কাছে
শুধুই সংগ্রাম।  


সারাদিন খেটেখুটে
যতটা পয়সা জুটে
কিছু যায় শাক-ক্ষুদে
কিনতে কিছু ওষুধে
ঘরেতে বৃদ্ধা মা জপছে মরণ,
তারাই কেবল বুঝে কেমন হয় জীবন।  


কষ্টের আগুনে পুড়ে
যারা হয় সোনা
যাদের আশা পূর্ণ হয়
কিছু হাতে গোণা
শ্রমের ঘামে ভিজে
যাদের শরীর হয় নোনা
চরাই উৎরাই পেরিয়ে
তারাই কেবল জানে,
বেঁচে থাকার সংগ্রামই
হলো জীবনের মানে।