আমি যন্ত্র,
আমি দিবানিশি জপি
উপরে যাবার মন্ত্র।  


আমি কেনাবেচার পাল্লা,
লাভের লোভে ভুলে যাই আমি
ভগবান, ঈশ্বর, আল্লাহ্‌।
বাটখারাতে ওজন মেপে
গণনা যন্ত্রের বোতাম চেপে
আমি গুণে যাই টাকা,
আমি ভাগ্য ঘোরার চাকা।
আমি সকল দিবস রাত
চালাই আমার সব্যসাচী হাত।
আমি যন্ত্ররূপী মানুষ।
আশার উপর আশা রেখে
উড়াই যতো ফানুস।


আমিতো বিষম চিন্তাই,
আমি মানুষের সুখ
অনায়াসে করি ছিনতাই।
আমি প্রাচুর্যকে করি হাওয়া,
লোভের রন্ধ্রে ঢুকে পড়ে শুধু
বাড়িয়ে দেই চাওয়া।


আমি অভাব,
টানাপড়েনেই টান দেয়া যার স্বভাব।
আমি কাউকে দেই না স্বস্তি,
ইট পাথরের শহরটাকে
করে তুলি এক বস্তি।


আমি ক্ষয়,
কমিয়ে দিয়েছি দুই হাতে ভবে
শরম, লজ্জা, ভয়।
কমাই সম্মানবোধ আমি,
মুল্যবোধের শিকড়টাকে মুচড়ে দিয়ে থামি।


আমি ভেজাল ভরা খাদ্য,
মানুষের মাঝে ডুবে গিয়ে আমি
বাজাই পচন বাদ্য।
আমি প্রক্রিয়াজাত আহার
আমার আছে হরেক রকম বাহার,
আমি রসায়নে ভরা পানি,
আমি অকালেতেই মানবকূলে
মৃত্যু ডেকে অ্যানি।


আমি ক্ষমতা পাবার লড়াই,
পেশী শক্তি, টাকার বলে
দেখাই আমার বড়াই।
আমি দলে দলে করাই রশি টানাটানি,
ত্রাস এনে করি যতো হানাহানি,
আমি শান্তি পতনে ঝড়,
নিরাশাবাদের পতাকা উড়াই,
ভাঙ্গি সুখের ঘর।


আমি রাজনৈতিক জট,
ক্ষণে ক্ষণে আনি জনদুর্ভোগ
আনি হরতাল, ধর্মঘট।
আমি হিংসা, প্রতিশোধ,
প্রতিহিংসার আগুণে পোড়াই,
আনি আন্দোলন, অবরোধ।
আমি খুন, আমি হত্যা,
আমি অপহরণ অগত্যা,
আমি ককটেল, আমি ব্যোম,
আমি মানুষ পুড়ে লাশ করি
আর সেই লাশেরই ডোম।


আমি দানব,
মানুষের বুকে পদচাপা দিয়ে
নিজেরি ভাবি মানব।
আমি রক্তচোষা জোঁক,
অসহায়ত্বের রক্ত চুষে,
দারিদ্রতার সুযোগ শুষে
সাজি সবার লোক।


আমি অনাচার,
মানুষের মাঝে পাপগুলো করি পাচার,
পাপ শুদ্ধির বালাই ঘুচিয়ে
দূরে ঠেলি সব আচার।
আমি পতন,  
মানুষের মাঝে রেষারেষি আনি,
শুণ্যে মেশাই মনীষীর বাণী,
আমি মন্দের করি যতন।


আমি ফানুস,
পাষণ্ড এক, লোভাতুর আমি,
হিংসা, বিদ্বেষ, পাপ মাঝে নামি,
মানবঘাতক মহাপাপী এক,
মানবখোলসে অমানুষ।